আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় অতি ক্ষুদ্র জীবানু অনুজীব – যা অনুজীব বিদ্যা এবং এর প্রয়োগ এর অন্তর্ভুক্ত |
অতি ক্ষুদ্র জীবানু অনুজীব
অণুজীব বা Microorganism অণুজীব অতি ক্ষুদ্র জীবাণু (Organism) যা খালি চোখে দেখা যায় না, কিন্তু অণুবীক্ষণ যন্ত্র (Microscope) -এর সাহায্যে দেখতে পাওয়া যায়। যেমন, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, ভাইরাস, প্রটোজোয়া ইত্যাদি।
অনুজীবের শ্রেণিবিভাগ-
জৈবিক গঠনের উপর ভিত্তি করে ৩ টি শ্রেণিতে বিভক্ত-
১) আদিকোষী অণুজীব (Prokaryotic micro-organism), যেমন- ব্যাকটেরিয়া, ব্লু-গ্রীন এলজি ইত্যাদি।
২) প্রকৃতকোষী অণুজীব (Eukaryotic micro-organism), যেমন- ছত্রাক, প্রেটোজোয়া ইত্যাদি। ৩) উপকোষী অণুজীব (Subcellular micro-organism), যেমন- ভাইরাস।

পরজীবী (Parasite):
যে সকল প্রাণি অন্য প্রাণির উপর বসবাস করে, ঐ প্রাণী হতে খাদ্য গ্রহণ করে নিজে উপকৃত হয় কিন্তু আশ্রয়দাতা প্রাণির (Host) ক্ষতি সাধন করে তাকে পরজীবী (Parasite) বলে। যেমন- কৃমি, উকুন, প্লাজমোডিয়াম ইত্যাদি।
ব্যাকটেরিয়া (Bacteria):
ব্যাকটেরিয়া এক প্রকার এককোষী জীবাণু। এদের নিউক্লিয়াস আছে কিন্তু নিউক্লিয়ার মেম্পব্রেন নেই- কক্কাস, ব্যাসিলাস, স্পাইরোকিটস ইত্যাদি।
ভাইরাস (Virus):
ভাইরাস এরা এক প্রকার ক্ষুদ্র জীবাণু। এরা কখনও জীব আবার কখনও জড় পদার্থের মতো আচরণ করে। যেমন- এইচ.আই.ভি; হেপাটাইটিস ভাইরাস, পক্স ভাইরাস ইত্যাদি।
প্রটোজোয়া (Protozoa):
প্রটোজোয়া এক প্রকার এককোষী প্রাণী। এরা একটি মাত্র কোষ দিয়েই তার জীবন চক্রের সকল কাজ সম্পন্ন করে থাকে। যেমন- এমিবা, জিয়ারডিয়া, ট্রাইকোমোনাস ইত্যাদি।
ছত্রাক (Fungus):
ছত্রাক ক্লোরোফিলবিহীন এমন একটি জীবগোষ্ঠী যারা বিভিন্ন পরিবেশে মৃতজীবী অথবা পরজীবী হিসেবে বসবাস করে এবং খাদ্যকে শোষণ করে দেহের অভ্যন্তরে নেয়। বর্ষাকালে স্যাঁতসেঁতে জায়গায়, বাসি পাউরুটির গায়ে, জুতার ওপর ছাতা পড়তে থাকবে, এরা সব ছত্রাক।
খুব সহজ-সরল পরগাছা হলো ছত্রাক এবং শ্রেণিগতভাবে উদ্ভিদ। এদের পরগাছা বলার কারণ হলো যে এদের দেহে অন্য উদ্ভিদের মতো শিকড়, কাণ্ড ও পাতা বলতে কিছুই থাকে না, নিজেদের খাবারও নিজেরা জোগাড় করতে পারে না।
স্পোর (Spore):
ব্যাকটেরিয়া যখন প্রতিকূল অবস্থায় থাকে তখন এর সাইটোপ্লাজম থেকে এক প্রকার আঠালো রস (ক্যারোটিন জাতীয় আমিষ দ্বারা গঠিত) নিঃসৃত হয়ে ব্যাকটেরিয়ার গায়ে লেগে থাকে এবং একে শৈত, তাপ ও বাইরের শত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করে তাকে স্পোর বলে।
স্পোর (Spore) এর বৈশিষ্ট-
ক) এরা প্রতিকূল পরিবেশে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে পারে।
খ) এরা অনেক দিন না খেয়েবেঁচে থাকতে পারে।
গ) স্পোরকে অল্প তাপ দিয়ে ধ্বংস করা যায় না।
স্পোর এর কাজ: ব্যাকটেরিয়াকে শুষ্ক, তাপ, ঠাণ্ডা থেকে রক্ষা করা, বাইরের শত্রুর আক্রমণ থেকে ব্যাকটেরিয়াকে রক্ষা করা।


আরও দেখুনঃ