অপুষ্টিজনিত রোগ

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় অপুষ্টিজনিত রোগ – যা জনস্বাস্থ্য এর প্রাথমিক ধারণা এর অন্তর্ভুক্ত।

অপুষ্টিজনিত রোগ

 

অপুষ্টিজনিত রোগ

 

বাংলাদেশে অপুষ্টি একটি মারাত্মক জাতীয় সমস্যা হিসাবে চিহ্নিত। দারিদ্র্য, খাদ্য ঘাটতি, পুষ্টি ও স্বাস্থ্য সম্পর্কে অজ্ঞতা এবং নানা রকম কুসংস্কার ছাড়াও বিভিন্ন আর্থ-সমাজিক কারণে দেশের অধিক সংখ্যক মানুষ, গৰ্ভৱতী ও প্রসুতি মহিলা এবং বাড়ন্ত শিশুরা সহজেই অপুষ্টিতে আক্রান্ত হচ্ছে।

বিভিন্ন প্রকার খাদ্য তথা পুষ্টি উপাদানের অভাবের ফলে বিভিন্ন বয়সের লোকদের মধ্যে নানা রকম অপুষ্টিজনিত রোগ দেখা দেয়। এ সমস্ত রোগের মধ্যে রয়েছে- ১। আমিষ শক্তির ঘাটতিজনিত অপুষ্টি (প্রোটিন এনার্জি ম্যালনিউট্রিশন) ক) ম্যারাসমাস বা হাড্ডিসার রোপ, এ কোয়াশিয়রকর বা গা ফোলা রোগ, ২। রাতকানা (নাইট ব্লাইন্ডনেস), ৩। মুখের বা ঠোঁটের কোনায় ঘা (এঙ্গুলার ‘ভাষাটাইটিস), ৪। রিকেটস, ৫। রক্তাল্পতা |

নিউট্রিশনাল এনিমিয়া

অপুষ্টিজনিত এই রোগগুলো সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হল-

ম্যারাসমাস বা হাড্ডিসার রোগঃ সাধারণত এক বৎসরের নীচের বয়সী শিশুদের মধ্যেই এ রোগের প্রকোপ বেশী দেখা যায়। এ রোগ হলে শরীর ক্রমশঃ রোগা হয়ে শীর্ণকায় বা হাড্ডিসার বা কঙ্কালসার হয়ে যায়। কোয়াশিয়রকর/পা ফোলা রোগঃ এক থেকে তিন বৎসর বয়সী শিশুদের মধ্যেই কোয়াশিয়রকর রোপটি বেশী দেখা যায়।

শিশুর যখন মায়ের দুধ খাওয়া ছেড়ে দিয়ে অন্য খাবার খেতে শুরু করে তখনই সাধারণত এ রোগটি বেশী হয়। একটি শিশু মায়ের দুধ খাওয়া অবস্থায় আরেকটি শিশুর জন্ম হলে প্রথম শিশুটি স্বভাবতই মায়ের দুখ থেকে বঞ্চিত হয়। ফলে একদিকে মায়ের দুধের উৎকৃষ্ট আমিব থেকে বঞ্চিত হয়, অপরদিকে দারিদ্রতার কারণে নিম্ন মানের অপর্যাপ্ত খাদ্য গ্রহণ এবং শিশুর ত্রুটিপূর্ণ খাদ্যাভ্যাসের দরুণ ঐ শিশুর খাদ্যে মারাত্মক আমিষের ঘাটতি হয়। এরকম অবস্থাতেই শিশুটি কোয়াশিয়রকর রোগে আক্রান্ত হয়।

 

অপুষ্টিজনিত রোগ

 

রাতকানা রোগ (Night Blindness) :

রাতকানা শিশুদের একটি প্রধান রোগ। বাংলাদেশের ব্যপক সংখ্যক শিশু রাতকানায় ভোগে। ৬ মাস থেকে ৬ বৎসর বয়সী শিশুদের মধ্যে রাতকানার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি।

মুখের বা ঠোঁটের কোনায় ঘা (Angular Stomatitis) :

বাংলাদেশে শীতকালে বিশেষতঃ গ্রামাঞ্চলে অনেকেরই ঠোঁটের কোনায় এবং জিহব্বায় ঘা হয়ে থাকে। এ রোগের লক্ষণ হল-ঠোঁট লাল হয়ে ফেটে যায়; মুখের বা ঠোঁটের দুই কোনায় ঘা হয় এবং হা করা যায় না,জিহব্বায় ঘা হয়, লাল হয়ে ফুলে যায়, ব্যথা হয় এবং খেতে অসুবিধা হয় ।

 

google news logo
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

 

রিকেটসঃ

বাংলাদেশে রিকেটস রোগের প্রকোপ খুব কম। ঘনবসতি বা বস্তি এলাকায় সেখানে মানুষ সূর্যের আলো কম পায় এবং সাথে সাথে ভিটামিন ‘ডি’ এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাদ্যও কম খায়, সে এলাকায় বিশেষতঃ ছোট শিশুদের রিকেটস রোগ বেশী হয়।

রক্তসল্পতা (Anaemia) :

রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলেই রক্তসল্পতা রোগ হয়। বাংলাদেশের প্রায় ৭০ জন লোকই রক্তসল্পতায় ভোগে। গর্ভবতী, প্রসূতি মহিলা এবং ছোট শিশুরাই এ রোগের সহজ শিকার। এ রোগের ফলে শরীর নিস্তেজ হয়ে আসে, কর্মক্ষমতা লোপ পায় এবং বিভিন্ন সংক্রামক রোগ সহজেই দেহকে আক্রমন করতে পারে।

আরও দেখুন:

Leave a Comment