খাদ্যগ্রহণের আদর্শ অবস্থান

আজকের আলোচনার বিষয়ঃ খাদ্যগ্রহণের আদর্শ অবস্থান। যা পেশেন্ট কেয়ার টেকনিক ১ এর খাদ্য ও পুষ্টির প্রাথমিক ধারণার প্রয়োগ অংশের অন্তর্গত।

 

খাদ্যগ্রহণের আদর্শ অবস্থান

 

খাদ্যগ্রহণের আদর্শ অবস্থান

শরীরে সঠিক প্রক্রিয়ায় খাদ্যের পরিপাকের জন্য বয়স বিবেচনায় ও ব্যক্তি বিশেষে খাদ্যগ্রহণের আদর্শ অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।

খাদ্যগ্রহণের আদর্শ অবস্থানের গুরুত্ব

  • মাথাকে সমর্থন করার জন্য ধড়ের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করে এবং সঠিকভাবে শ্বাস নেয়ার সুযোগ দেয়
  • চোয়ালের স্থিতিশীলতায় সহায়তা করে।
  • নিরাপত্তা এবং স্বস্তি প্রদান করে
  • খাওয়ার কাজে মনোযোগ বাড়াতে উৎসাহিত করে
  • হাত ও মুখের সন্চালনের ভালো সমন্বয় করে
  • শ্বাসনালীতে খাদ্য ও তরল পদার্থের আটকে যাওয়া রোধ করে হজমশক্তির উন্নতি ঘটায়, ক্লান্তি হ্রাস করে
  • খাওয়ার সময় সামাজিকতাকে উৎসাহিত করে নতুন ধরনের খাদ্যগ্রহণকে উৎসাহিত করে।

 

google news logo
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

 শিশুদের খাদ্যগ্রহণের আদর্শ অবস্থান

  • শিশু চেয়ার-টেবিলে বসে খওয়ার জন্য উপযুক্ত হয়েছে কিনা তা লক্ষ্য রাখতে হবে। শিশুদের জন্য সীটবেল্টসহ হাইচেয়ারের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। বেশিরভাগ শিশুই প্রায় ৫-৬ মাস বয়সে হাইচেয়ারে বসতে সক্ষম হয়। সীটবেল্ট পেলভিসকে স্থিতিশীল করতে সাহায্য করে। নিশ্চিত করতে হবে যেন সীটবেল্টগুলো তাদের শ্বাস-প্রশ্বাসে হস্তক্ষেপ না করে বা তাদের পেটে চাপ সৃষ্টি না করে।
  • খাদ্যগ্রহণের সময় শিশুর নিতম্ব, হাঁটু এবং পা ৯০ ডিগ্রী অবস্থানে সমানভাবে সমন্বয় করতে হবে।
  • একটি আরামদায়ক অবস্থান বজায় রাখার জন্য চেয়ারের আসন এবং শিশুর পিঠ ৯০ ডিগ্রী অবস্থানে থাকতে হবে।
  • চেয়ারের নিচে পা রাখার আয়নার ব্যবস্থা করতে হবে। পা ফুলন্ত অবস্থায় রাখলে শিশু অষতি যোগ করবে। প্রয়োজনে পাকের নিচে আরেকটি ছোট চেয়ার দিতে হবে।
  • প্রয়োজনে বসার জায়গায় তোয়ালে বা কুশন ব্যবহার করতে হবে।
  • খাওয়ার টেবিল বা সবসময় শিশুর নাভি এবং বুকের মাঝ বরাবর থাকতে হবে।
  • টেবিলের পৃষ্ঠ যেন সজবুত হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • বাড়ির সবাই একসাথে খেতে বসতে হবে।
  • শিশুর নিজ হাতে শীক্ষরাতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। প্রয়োজনে কাটলারীর ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
  • খাওয়ার গ্রেট ও সময়কে বৈচিত্র্যময় করে তুলতে হবে।

**বিশেষ দ্রষ্টব্য:

সহায়ক সরঞ্জাম (Assistive device) সেরিব্রাল পালসি, মাসকুলার ডিস্টোকি ইত্যাদি বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য, খাওয়ার সময় অবস্থানের ক্ষেত্রে একই নীতিগুলো প্রৰোজ্য। তবে তাদের এই অবস্থান বজায় রাতে সাহায্য করার জন্য কম দ্বারা উপকৃত হতে পারে। চাইর ডেভেলপমেন্ট সেন্টারগুলোতে ডেভেলপমেন্টাল পেরাপিস্টরা এধরনের যন্ত্রণা থাকেন।

 

 

খাদ্যগ্রহণের আদর্শ অবস্থান

 

সুস্থ সবল প্রাপ্তবয়স্কদের খাদ্যগ্রহণের আদর্শ অবস্থান

  • টেবিলের কাছাকাছি বসতে হবে, যেন পেটে চাপ না পড়ে ।
  • খাদ্যগ্রহণের সময় নিতম্ব, হাঁটু এবং পা ৯০ ডিগ্রী অবস্থানে সমানভাবে সমন্বয় করতে হবে।
  • একটি আরামদায়ক অবস্থান বজায় রাখার জন্য চেয়ারের আসন এবং পিঠ ৯০ ডিগ্রী অবস্থানে থাকতে হবে।
  • বসার সময় পা যেন নিচে সমতলপৃষ্ঠে রাখা যায়।
  • প্রয়োজনে স্বস্তি লাভের জন্য পিঠের পিছনে কুশন দিতে হবে।
  • অম্বল, বদহজম বা পেট ব্যাথার উপসর্গগুলো প্রতিরোধ করতে খাওয়ার ১০ থেকে ২০ মিনিটের জন্য সোজা হয়ে বসে থাকা ভালো।
  • খাওয়ার সময় আঁটসাঁট পোশাক এড়িয়ে চলুন।
  • চিবানোর সময় কথা না বলাই উত্তম।

 

খাদ্যগ্রহণের আদর্শ অবস্থান

 

বয়স্কদের খাদ্যগ্রহণের আদর্শ অবস্থান

  • যদি গ্রাহক নড়াচড়া করতে পারে এবং গুরুতর অসুস্থ না হয়, তাহলে নিশ্চিত করতে হবে যে অচলাবস্থায়ও ব্যক্তি যেন মাথা, পিঠ ও ঘাড় সোজা করে বসতে পারেন। দরকার হলে বালিশ দিয়ে পিছনের দিকে হেলান দিয়ে বসতে সাহায্য করতে হবে। মাথা সামনে দিকে নিয়ে চিবুক সামান্য নিচু করতে বলতে হবে।
  • শারীরিক প্রতিবন্ধীতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে খাবার গলধকরণ করতে অসুবিধা হতে পারে। কারো কারো একপাশ বা উভয় পাশই দুর্বল হতে পারে। যে পাশ বেশি দুর্বল সেইপাশে সাপোর্ট দিতে হবে।
  • খাওয়ানোর সময় ব্যক্তির চোখের লেভেলে বা তার নীচে বসতে হবে।
  • খাওয়ানোর সময় ব্যক্তিকে ফিডিং গাউন পরিয়ে নিতে হবে।
  • ব্যক্তির মুখে স্নায়ুজনিত কোনো দুর্বলতা থাকলে, অপেক্ষাকৃত সবল পাশে বসে খাওয়াতে হবে। ব্যক্তির মুখের অপেক্ষাকৃত সবল অংশে খাবার দিতে হবে।
  • ব্যক্তি নিজের হাতে খেতে পছন্দ করলে তার দৃষ্টিশক্তি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। এমনভাবে তার সামনে খাবার রাখতে হবে এবং তার বসার ব্যবস্থা করতে হবে, যেন তিনি খাবার ভালো মতো দেখতে পান।
  • শয্যাশায়ী ব্যক্তিদের বিছানায় খাবার পরিবেশন করতে ট্রলি ব্যবহার করতে হবে।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment