খাদ্য নিরাপত্তার নীতি প্রণয়ন

আজকের আলোচনার বিষয়ঃ খাদ্য নিরাপত্তার নীতি প্রণয়ন । যা পেশেন্ট কেয়ার টেকনিক ১ এর খাদ্য ও পুষ্টির প্রাথমিক ধারণার প্রয়োগ অংশের অন্তর্গত।

 

খাদ্য নিরাপত্তার নীতি প্রণয়ন

 

খাদ্য নিরাপত্তার নীতি প্রণয়ন

খাদ্য নিরাপত্তা (Food safety)

খাদ্য নিরাপত্তা (বা খাদ্য স্বাস্থ্যবিধি) একটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি, যা খাদ্যের প্রস্তুতি এবং সংরক্ষণের পদ্ধতি ব্যাখ্যা করে খাদ্যের মাধ্যমে ছড়ানো রোগ প্রতিরোধ করে। খাদ্য নিরাপত্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্য সমস্যা। খাদ্য সরবরাহের নিরাপত্তা উন্নত করার জন্য, উন্নত ও উন্নয়নশীল উভয় ধরনের দেশসমূহে খাদ্যবাহিত রোগের প্রতুলতা একটি উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে থেকে গেছে। অনুমান করা হয় যে প্রতি বছর ১.৮০মিলিয়ন মানুষ ডায়রিয়া জনিত রোগের ফলে মারা যায় এবং এর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দূষিত খাবার বা পানি এর জন্য দায়ী।

 

google news logo
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

গবেষণায় দেখা গেছে যে ২০০ টিরও বেশি পরিচিত রোগ খাবারের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। সঠিক খাদ্য প্রস্তুতি বেশিরভাগ খাদ্যবাহিত রোগ প্রতিরোধ করতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-র তথ্য থেকে জানা যায় যে, খাদ্য পরিচালনার সাথে সম্পর্কিত খুব অল্প সংখ্যক কারণই সর্বত্র খাদ্যজনিত রোগের জন্য দায়ী। এই কারণগুলো হল:

  • খাবার গ্রহণের কয়েক ঘণ্টা আগে খাবার তৈরি করা এবং অনুপযুক্ত তাপমাত্রায় তা সংরক্ষণ করা, যার কারণে সেই খাবারে প্যাথোজেনিক ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি অথবা বিষাক্ত পদার্থ তৈরির সম্ভাবনা
  • প্যাথোজেন কমাতে বা নির্মূল করার জন্য খাবার বার বার গরম করা।
  • সব ধরনের খাবার একসাথে রেখে সংরক্ষণ করা।
  • ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার অপর্যাপ্ততা।

খাদ্য নিরাপত্তার উন্নতির সাথে বেশ কিছু সুবিধা জড়িত, যেমন: বর্ধিত উৎপাদনশীলতার কারণে অর্থনৈতিক লাভ, স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার উপর চাপ কমানো এবং খাদ্য অপচয় কমানোর মাধ্যমে পরিবেশ সুরক্ষা।

 

খাদ্য নিরাপত্তার নীতি প্রণয়ন

 

খাদ্য নিরাপত্তার নীতি প্রণয়ন

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) দীর্ঘদিন ধরে খাদ্য সুরক্ষার জন্য বিশ্ববাসীকে খাদ্য নিরাপত্তা সম্পর্কে শিক্ষিত করাতে সচেতন রয়েছে। ১৯৯০ এর দশকের শুরুর দিকে, ডব্লিউএইচও নিরাপদ খাদ্য প্রস্তুতির জন্য দশটি সুবর্ণ নিয়ম তৈরি করেছিল, যেগুলো ব্যাপকভাবে অনুবাদ এবং সংশোধন করা হয়েছিল। খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের সাথে প্রায় এক বছর আলোচনার পর, ডব্লিউএইচও ২০০১ সালে নিরাপদ খাদ্য প্রস্তুতের পাঁচটি মূলনীতি প্রবর্তন করে, যা ২০১৫ সালে পুনরায় পরিমার্জনা করা হয়।

 

অপুষ্টির প্রকারভেদ

 

নিরাপদ খাদ্য প্রস্তুতির জন্য পূর্বের প্রবর্তিত দশটি সুবর্ণ নিয়মের সমস্ত বার্তা সহজ শিরোনামের অধীনে এই নতুন পাঁচটি মূলনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। “নিরাপদ খাদ্য, উন্নত স্বাস্থ্য” এই বছরের বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তা দিবসের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়, যা ২০২২ সালের ৭ জুন অনুষ্ঠিত হয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কারণ এবং পন্থা বিবেচনা করার সময়, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (The Food and Agriculture Organization of the United Nations-FAO) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (world health organization – WHO) বেশ কয়েকটি মূল বার্তা প্রচার করে

  • যদি খাদ্য সামগ্রী নিরাপদ না হয়, তবে তা খাদ্যই না; খাদ্য নিরাপত্তা স্বাস্থ্যের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে; খাদ্য নিরাপত্তার সবার দায়িত্ব; খাদ্য নিরাপত্তা বিজ্ঞানসম্মত; সবার একাগ্রতা খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করে; আজকে খাদ্য নিরাপত্তায় বিনিয়োগ করলে আগামী দিনে সুন্দর ও সুস্থ জীবন লাভ করা যাবে।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment