আজকের আলোচনার বিষয়ঃ খাদ্য প্রক্রিয়াকালে খাদ্য নিরাপত্তার মূলনীতি। যা পেশেন্ট কেয়ার টেকনিক ১ এর খাদ্য ও পুষ্টির প্রাথমিক ধারণার প্রয়োগ অংশের অন্তর্গত।

খাদ্য প্রক্রিয়াকালে খাদ্য নিরাপত্তার মূলনীতি
খাদ্য নিরাপত্তার পাঁচটি মূলনীতি হল :
মূলনীতি ১. বিশুদ্ধ নিরাপদ পানি এবং নিরাপদ কাঁচামাল ব্যবহার করা
মূলনীতি ২. পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা
মূলনীতি ৩. উপযুক্ত তাপমাত্রায় খাবার রান্না করা
মূলনীতি ৪. সঠিক তাপমাত্রায় খাবার সংরক্ষণ করা
মূলনীতি ৫. কাঁচা এবং রান্না করা খাবার আলাদা রাখা

নিম্নে এই মূলনীতিগুলো বর্ণনা করা হল।
মুলনীতি ১.
বিশুদ্ধ নিরাপদ পানি এবং নিরাপদ কাঁচামাল ব্যবহার করা
- নিরাপদ পানি ব্যবহার করতে হবে। পানিকে নিরাপদ ও ব্যবহার
- উপযোগী করতে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে। তাজা এবং স্বাস্থ্যকর খাবার নির্বাচন করতে হবে
- ক্ষেত্র বিশেষে নিরাপত্তার জন্য প্রক্রিয়াজাত খাবার বেছে নিন, যেমন পাস্তুরিত দুধ
- ফল এবং সবজি ধুয়ে খেতে হবে, বিশেষ করে যদি তা কাঁচা খাওয়া হয়।
- মেয়াদের তারিখ শেষ হওয়ার পর সেই খাবার ব্যবহার করা যাবে না।
মুলনীতি ২.
পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা
- খাবার ধরার আগে এবং খাবার তৈরির সময় হাত ধুয়ে নিতে হবে।
- টয়লেটে যাওয়ার পরে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে।
- খাদ্য প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত সমস্ত পৃষ্ঠ/স্থান এবং সরঞ্জাম পরিষ্কার করে নিতে হবে।
- পোকামাকড়, ইঁদুর এবং অন্যান্য প্রাণী থেকে রান্নাঘরের এলাকা রক্ষা করতে হবে।

মূলনীতি ৩.
উপযুক্ত প্রক্রিगाর রাজা করা
- খাবার উপযুক্ত প্রক্রিয়ায় পুণানুপুঙ্খভাবে রান্না করতে হবে, বিশেষ করে মাংস, মুরগি, ডিম এবং সামুদ্রিক খাবার।
- স্যুপ এবং ট্যুর মতো খাবারগুলোকে ৭০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ফুটাতে হবে, যেন মাংস বা মাছ থেকে নির্গত তরল পদার্থগুলো গোলাপী না দেখায়।
- রান্না করা খাবার পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে উপযুক্ত তাপমাত্রায় গরম করতে হবে।
মূলনীতি ৪.
সঠিক তাপমাত্রায় খাবার সংরক্ষণ করা
- ২ ঘণ্টার বেশি ঘরের তাপমাত্রায় রান্না করা খাবার ফেলে রাখা যাবে না।
- সমস্ত রান্না করা এবং পচনশীল খাবার অবিলম্বে ফ্রিজে রাখতে হবে (৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে)।
- পরিবেশন করার আগে রান্না করা খাবারের তাপমাত্রা ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি রাখুন রাখতে হবে।
- রেফ্রিজারেটরে বেশিদিন খাবার রাখা যাবে না
- ঘরের তাপমাত্রায় সংরক্ষিত খাবার খাওয়া যাবে না।

মুলনীতি ৫.
কাঁচা এবং রান্না করা আবার আলাদা রাখা
- অন্যান্য খাবার থেকে কাঁচা মাংস, মুরগি এবং সামুদ্রিক খাবার আলাদা করে রাখতে হবে।
- কাঁচা খাবারের জন্য পৃথক সরঞ্জাম এবং পাত্র, যেমন ছুরি এবং কাটিং বোর্ড ব্যবহার করতে হবে।
- কাঁচা এবং প্রভুত খাবারের মধ্যে সংযোগ এড়াতে ভিন্ন ভিন্ন পাত্রে খাবার সংরক্ষণ করতে হবে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে নিরাপদ এবং পুষ্টিকর খাবার বেঁচে থাকার এবং সুস্বাস্থ্যের চাবিকাঠি। ক্ষতিকারক জীবাণু (ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা পরজীবী) বা রাসায়নিক বিষাক্ত পদার্থ দ্বারা দূষিত হলে খাদ্য রোগ সংক্রমণের বাহন হতে পারে। পুষ্টি এবং খাদ্য নিরাপত্তা ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। অনিরাপদ খাদ্য রোগ এবং অপুষ্টির একটি দুষ্ট চক্র তৈরি করে, বিশেষ করে শিশু, ছোট শিশু, বয়স্ক এবং অসুস্থদের প্রভাবিত করে।
খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় অবদান রাখার পাশাপাশি, নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ জাতীয় অর্থনীতি, বাণিজ্য এবং পর্যটনকেও প্রভাবিত করে, উন্নয়নকে উদ্দীপিত করে। খাদ্য বাণিজ্যের বিশ্বায়ন, ক্রমবর্ধমান বিশ্ব জনসংখ্যা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং যুক্ত পরিবর্তনশীল খাদ্য ব্যবস্থা খাদ্যের নিরাপত্তার উপর প্রভাব ফেলে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার লক্ষ্য বিশ্ব ও দেশ-পর্যায়ে অনিরাপদ খাদ্যের সাথে যুক্ত জনস্বাস্থ্যের হুমকি প্রতিরোধ, সনাক্তকরণ এবং সাড়া দেওয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
আরও দেখুনঃ