আজকে আমরা পেশেন্ট কেয়ার টেকনিশিয়ানের পেশাদারিত্ব সম্পর্কে আলোচনা করবো। যা পেশেন্ট কেয়ার টেকনিক ১ এর পেশেন্ট কেয়ার টেকনিকের প্রাথমিক ধারণা অংশের অন্তর্গত।

পেশেন্ট কেয়ার টেকনিশিয়ানের পেশাদারিত্ব
কর্মক্ষেত্রে পেশেন্ট কেয়ার টেকনিশিয়ান একজন পেশাদার কেয়ারগিভার হিসেবে পরিগণিত হয়ে থাকে। এই পেশাগত পরিচয় সাধারণত একটি নির্দিষ্ট প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেশন (সনদ) অর্জনের মাধ্যমে অর্জিত হয়। তবে, একজন পেশাদার কেয়ারগিভার হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে হলে কেবল প্রশিক্ষণ ও সনদই যথেষ্ট নয়।
পেশাদারিত্ব বলতে সাধারণত নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্যসমূহ সঠিক আচরণের মাধ্যমে নিজের সর্বোচ্চ দক্ষতা দিয়ে সম্পাদন করাকে বুঝানো হয়। একজন কেয়ারগিভার তার আচার-আচরণ, যোগাযোগের দক্ষতা, পোষাক- পরিচ্ছদ, ইতিবাচক মনোভাব প্রভৃতির মাধ্যমে পেশাদারিত্বের গুণাবলি ফুটিয়ে তুলতে পারেন সহজেই।

এক্ষেত্রে নিচের কয়েকটি বিষয় বিশেষভাবে বিবেচ্য:
কর্তব্যজ্ঞান ও জবাবদিহিতা:
নিজের কর্তব্য সম্পর্কে সর্বদা সচেতন থাকতে হবে। একজন অসুস্থ রোগী নিয়ে কাজ করতে হলে সামান্য অবহেলার কারণে অনেক সময় অনেক বড় সমস্যা হয়ে যেতে পারে, এমনকি রোগীর জীবনও চলে যেতে পারে। তাই, কেয়ারগিভার হিসেবে প্রতিটি কাজ সুচারুরূপে কর্তব্যজ্ঞান প্রয়োগ করে সম্পাদন করতে হবে। কাজের প্রতি দায়িত্বশীল থেকে নিজেকে জবাবদিহি রাখতে হবে।
সমায়নুবর্তিতা ও নিয়মানিবর্তিতা:
উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বা কেয়ার সুপারভাইজার কর্তৃক নির্দেশিত কেয়ার প্ল্যান অনুযায়ী সময় ও নিয়ম মাফিক কার্যসম্পাদন করতে হবে। এটি কর্মক্ষেত্রে যেকোনো ব্যক্তির পেশাদারিত্বের একটি বড় পরিচয়।
সহানুবর্তিতা এবং সহমর্মিতা:
রোগী ও তার স্বজনদের সমস্যার প্রতি সহানুভূতিশীল ও সহমর্মিতাসম্পন্ন হতে হবে। কোনো প্রকারেই বিরক্তি বা ঠাট্টা-মশকরা বা হাসাহাসি করা যাবে না।

সততা ও বিবেকবোধ:
একজন কেয়ারগিভারকে অবশ্যই সৎ ও বিবেকবান হতে হবে। কোনোভাবেই রোগীর বা তার স্বজনের কোনোকিছু অসৎ উপায়ে আত্মসাৎ করা যাবে না। নিজের লাভের জন্য অন্যের ক্ষতি করা যাবে না ।
নির্ভরযোগ্যতা:
নির্ভরযোগ্যতা বলতে স্বাস্থ্য সেবা দলের কাছে নিজের প্রয়োজনীয়তা প্রতিষ্ঠিত করাকে বুঝায়। সহকর্মীদের ক্ষেত্রে এর অর্থ হচ্ছে এই যে, কেয়ারগিভারকে কোনো কাজের নির্দেশনা প্রদান করলে সেটি বিশ্বাসযোগ্য ভাবে কেয়ারগিভার সম্পাদন করতে পারবে।
গোপনীয়তা:
রোগীর ও তার পরিবারের চিকিৎসা সম্পর্কিয় তথ্যাবলি গোপন রাখা একটি গুরুদায়িত্ব। কোনোভাবে কোড অব কনডাক্টের বাইরে গিয়ে গোপনীয়তা ভঙ্গ করা যাবে না।
নম্রতা-ভদ্রতা ও সাহায্যের মনোভাব:
কেয়ারগিভারকে নম্র-ভদ্র ও আচরণে শালীন হতে হবে। সাহায্য করার মনোভাব থাকতে হবে; কেননা কেয়ারগিভিং কাজটি অত্যন্ত শ্রমসাধ্য ও ধৈর্য্যের সাথে সম্পাদন করতে হয়।

যোগাযোগের দক্ষতা:
যোগাযোগের দক্ষতা পেশাদারী আচরণের একটি বড় নিদর্শন। সঠিকভাবে মৌখিক ও অমৌখিক যোগাযোগের পাশাপাশি নিরপেক্ষ শ্রবন কৌশলও এর অন্তর্ভুক্ত।
অর্পিত দায়িত্বের বাইরের কাজ না করা:
কেয়ারগিভার তার কার্যপরিধির বাইরের কাজ করবেনা, প্রয়োজন হলে উপযুক্ত পেশাজীবীকে সহায়তা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় যোগাযোগ করবে।
প্রবলেম সলভিং স্কিল্সঃ
কর্মক্ষেত্রে কেয়ারগিভার নানারকম সমস্যার মুখে পড়তে পারে। যেমন; রোগীর শারীরিক অবস্থা নিজের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া, কিংবা হঠাৎ করে কোনো ওষধ বা অন্য কোনো সামগ্রীর স্টক ফুরিয়ে যেতে পারে ইত্যাদি। এধরনের যেকোনো পরিস্থিতিতে ঠাণ্ডা মাথায় সমস্যা সমাধানের কার্যকর দক্ষতা একজন কেয়ারগিভারের জন্য অপরিহার্য।
আরও দেখুনঃ