আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার (পিডি) বা ব্যক্তিত্ব বৈকল্য কী? – যা প্রাথমিক চিকিৎসা সহায়তা এর অন্তর্ভুক্ত।
পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার (পিডি) বা ব্যক্তিত্ব বৈকল্য কী?

পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার
- ব্যক্তিত্বের বৈকল্যে ব্যক্তির চিন্তাভাবনা, অনুভব বা আচরণ সমাজের প্রচলিত ও স্বীকৃত মানদণ্ডের তুলনায় ভিন্ন হয়
- সাধারণত কৈশোরে ব্যক্তিত্ব বৈকল্যের উত্থান ঘটে যা দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে
- অধিকাংশ ক্ষেত্রে শৈশবে মানসিক আঘাত পাওয়ার অভিজ্ঞতা থাকে, যেমন: বঞ্চনা ও নির্যাতনের
শিকার হওয়া - জীবনে মানিয়ে চলতে সমস্যা হয় যা নিজের এবং অন্যের জন্য দূর্দশার কারণ হয়ে দাঁড়ায়
- আত্মহত্যা ও নিজের ক্ষতি করার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়
- ৪-১৫% মানুষের মধ্যে ব্যক্তিত্ব বৈকল্য দেখা যায়
ইটিং ডিসঅর্ডার বা খাদ্যবিকার কী?
- ইটিং ডিসঅর্ডার বা খাদ্যাভ্যাসজনিত বিকার বা খাদ্যবিকার একটি মানসিক সমস্যা, যা স্বাস্থ্যে সমূহ ক্ষতি ডেকে আনতে পারে
- এ ক্ষেত্রে ব্যক্তির তার খাবার, ওজন, ইত্যাদি নিয়ে সর্বদা চিন্তায় ভোগেন এবং নিজেদের খাদ্যাভ্যাসে
ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে আসেন।
আচরণগত লক্ষণ
- অকারণে নিয়মিত উপোস এবং সবসময় ক্যালোরির হিসাব রাখা
- যেকেনো ছুঁতোয় অন্যদের সাথে খাওয়া এড়িয়ে যাওয়া, কিন্তু সুযোগ পেলে লুকিয়েচুরিয়ে খাওয়া সাধারণত
- খাবার খাওয়ার সাথে সাথেই বা একটু পরেই সেটাকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা; যেমন, বমি করা বা ঘন ঘন শৌচাগারে গিয়ে মলত্যাগের চেষ্টা করা
- রোজ একাধিকবার নিজের ওজন মাপা, আয়নায় নিজেকে দেখা
- অতিরিক্ত ব্যায়াম, এমনকি অসুস্থ শরীরে বা বৃষ্টি বাদলার দিনেও ওজন ঝরাতে বাইরে দৌড়ানো
শারীরিক লক্ষণ
- অনেক কম বা বেশি ওজন বা ঘন ঘন ওজনে তারতম্য
- সবসময় ক্লান্তবোধ করা
- সঠিক পরিমাণ ঘুম না হওয়া
- অতিরিক্ত শীতকাতুরে ভাব
- সবসময় মাথাঘোরা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
- মেয়েদের অনিয়মিত ঋতুচক্র

মানসিক লক্ষণ
- সবসময় ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয়
- খাবার নিয়ে দুশ্চিন্তা
- নিজের ওজন নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভোগা
- ডিপ্রেশন এবং অ্যাংজাইটির শিকার হওয়া
খাদ্যবিকারের ধরন
- অ্যানোরেক্সিয়া নার্ভোসা: ওজন বেড়ে যাবার ভয়ে এঁরা খাওয়া একেবারেই বন্ধ করে দেন। রোগা হওয়া সত্ত্বেও নিজের ওজন বেশী মনে হবার কারণে তাঁরা সবসময় গ্লানিবোধে ভোগেন।
- বুলিমিয়া নার্ভোসা: এই রোগে ব্যক্তি প্রথমে অতিরিক্ত খান তারপরে জোর করে বমি এবং মলত্যাগ করেন। এরপর তাঁরা অনেকক্ষণ উপোস করে থাকেন এবং অতিরিক্ত ব্যায়াম করেন। এঁদের মনে হয় যে তাঁরা খাওয়া এবং ওজন খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।
- অতিরিক্ত খাদ্যগ্রহণের সমস্যা: লাগামছাড়াভাবে বেশি খাওয়ার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। এঁরা কখনই ওজন কমানোর চেষ্টা করেন না। খিদে না পেলেও এঁরা লুকিয়ে লুকিয়ে খান।

খাদ্যবিকারের কারণ :
- মানসিক কারণ: অ্যাংজাইটি, ডিপ্রেশন ও স্ট্রেস
- সামাজিক কারণ: রোগা মানেই সুন্দর
- আচরণগত কারণ:অতিমাত্রায় আত্মসচেতনতা এবং খুঁতখুঁতে স্বভাব
- ব্যক্তিগত কারণ: ওজন নিয়ে ঠাট্টা-তামাশা বা যৌন হেনস্থার শিকার হওয়া, নিকটজনের মৃত্যু বা পরীক্ষায় ফেল করা ইত্যাদি
আরও দেখুন: