পুষ্টি উপাদান, উৎস ও গুরুত্ব

আজকের আলোচনার বিষয়ঃ পুষ্টি উপাদান, উৎস ও গুরুত্ব। যা পেশেন্ট কেয়ার টেকনিক ১ এর খাদ্য ও পুষ্টির প্রাথমিক ধারণার প্রয়োগ অংশের অন্তর্গত।

 

পুষ্টি উপাদান, উৎস ও গুরুত্ব

 

Table of Contents

পুষ্টি উপাদান, উৎস ও গুরুত্ব

পুষ্টি (Nutrition)

পুষ্টি বলতে এমন একটি অবস্থাকে বোঝায়, যখন আমরা যা খাই তা শরীরের সমস্ত শরীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপ সম্পাদন করার জন্য প্রস্তাবিত পরিমাণে পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করতে সক্ষম হয়। এটি মানুষের বয়স, শরীরবৃত্তীয় অবস্থা, শারীরিক কার্যকলাপের সক্ষমতা এবং লিঙ্গের উপর নির্ভর করে। আমাদের জীবনচক্রে প্রাক-গর্ভধারণ, গর্ভধারণ, গর্ভাবস্থা, শৈশব, কৈশোর এবং যৌবন, সর্বদা পুষ্টিকর খাদ্য গুরুত্বপূর্ণ। পুষ্টিকর খাদ্য একজন ব্যক্তিকে স্বাস্থ্যকর ও উৎপাদনশীল করে তোলে এবং জীবনের মান উন্নত করে।

ভালো পুষ্টি মানে

  •  সঠিক খাবার খাওয়া।
  • সঠিক সময়ে খাবার খাওয়া।
  • সঠিক গুণমান এবং পরিমাণ নিশ্চিত করে একটি সুষম খাদ্য তালিকা তৈরি করা ।
  • সঠিক উপায়ে এবং সঠিক জায়গায় সঠিক নিয়মে খাদ্য প্রস্তুত করা।
google news logo
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

পুষ্টি উপাদান, উৎস ও গুরুত্ব

পুষ্টি উপাদান (Nutrients):

পুষ্টি উপাদান হল খাবারে থাকা পদার্থ যা শরীরকে পুষ্ট করে। সাধারণ স্বাস্থ্য এবং শরীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপ বজায় রাখার জন্য এগুলো প্রয়োজন, উদাহরণস্বরূপ: শক্তি সরবরাহ করা, শরীরের গঠন তৈরি করা, শরীরকে উষ্ণ রাখা, রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং শরীরের বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপ নিয়ন্ত্রণ করা, যা বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য।

প্রকারভেদ (Classification):

খাদ্যের পুষ্টি উপাদানকে তিনটি প্রধান শ্রেণিতে ভাগ করা ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্টস, মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস এবং পানি।

১) ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্টস (Macronutrients)

এগুলো বেশি পরিমাণে প্রয়োজন:

ক. কার্বোহাইড্রেট/শর্করা

খ. প্রোটিন/আমিষ

গ. লিপিড/স্নেহ/ডেল

ক. কাবোহাইড্রেট শর্করা (Carbohydrates):

কার্বোহাইড্রেট/শর্করা শক্তির প্রাথমিক উৎস। এর মধ্যে রয়েছে স্টার্চ, ফাইবার/আঁশযুক্ত খাবার এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার। মিষ্টি খাবার যেমন চিনি, জ্যান, কেক এবং চিনিযুক্ত পানীয়গুলো কার্বোহাইড্রেটের উৎস, তবে এগুলো ন্যূনতমভাবে খাওয়া উচিত। কারণ এগুলো জন্য কোনোও পুষ্টি সরবরাহ করে না এবং অতিরিক্ত ওজনের ঝুঁকি বাড়ায়।

(1) উপলব্ধ কার্বোহাইড্রেট (Available Carbohydrates):

শর্করা স্টার্ট হিসাবে প্রচুর পরিমাণে শস্য, শিম, ভাল এবং আলুতে উপস্থিত থাকে। এগুলো চিনি, গুড়, ফল, মধু এবং দুধে সাধারণ কার্বোহাইড্রেট হিসাবে উপস্থিত থাকে। স্টার্চ এবং শর্করা সহজে হজম হয় এবং শরীরে শক্তি যোগায়।

(ii) অনুপলব্ধ কার্বোহাইড্রেট বা আঁশজাতীয় শর্করা (Unavailable Carbohydrates / Dietary fibers):

এগুলো সেলুলোজ এবং হেমিসেলুলোজ আকারে উপস্থিত থাকে যা আমাদের শরীরে হজম হয় না । আঁশজাতীয় শর্করা শরীরের তৃপ্তির অনুভূতি বাড়িয়ে অতিরিক্ত খাওয়া প্রতিরোধ করে। আঁশজাতীয় শর্করা সমৃদ্ধ খাবার কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে রক্ষা করে। আঁশজাতীয় শর্করা শরীরের চিনি এবং কোলেস্টেরলের শোষণকে ধীর করে দিতে পারে, যা শরীরকে হার্ট ডিজিজস বা হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা করে। আঁশজাতীয় শর্করা প্রধান উৎস হল সম্পূর্ণ শস্য, উদাহরণস্বরূপ: ওটস, ভুসি ইত্যাদি সবজি, উদাহরণস্বরূপ: বাধাকপি, কুমড়া পাতা ইত্যাদি, মটরশুটি, মটর ইত্যাদি এবং আম, কমলা এবং আনারসের মতো ফল ।

 

 

পুষ্টি উপাদান, উৎস ও গুরুত্ব

 

কার্বোহাইড্রেটের কাজ :
  • কার্বোহাইড্রেট শক্তি যোগায় ।
  • কার্বোহাইড্রেট শরীরের গঠনের জন্য অতিরিক্ত প্রোটিন তৈরি করে।
  • আঁশজাতীয় শর্করা মলের পরিমাণ বাড়ায় এবং মলত্যাগে সাহায্য করে।

** ১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ৪ কিলোক্যালরি শক্তি দেয়।

কার্বোহাইড্রেটের খাদ্য উৎস:
  • খাদ্যশস্য – গম, চাল, ভুট্টা ইত্যাদি
  • ডাল- রাজমা, ছানা, ডাল
  • শিকড় এবং কন্দ – আলু, মিষ্টি আলু, বিটরুট
  • চিনি, গুড়
শরীরে কার্বোহাইড্রেটের চাহিদা:

শরীরে কার্বোহাইড্রেটের চাহিদা কার্বোহাইড্রেটের বয়স, লিঙ্গ, শারীরিক কার্যকলাপের সক্ষমতা এবং শরীরবৃত্তীয় অবস্থা অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। শরীরের প্রতিদিন মোট শক্তি/ক্যালোরি প্রয়োজন ২০০০ থেকে ৩০০০ কিলোক্যালরি (kcal), তার মধ্যে প্রায় ৪৫% থেকে ৬৫% আমরা পেয়ে থাকি কার্বোহাইড্রেট থেকে। এক গ্রাম কার্বোহাইড্রেট শরীরে চার কিলোক্যালরি শক্তি সরবরাহ করে।

 

 

পুষ্টি উপাদান, উৎস ও গুরুত্ব

 

খ. প্রোটিন/আমিষ (Proteins):

প্রোটিন হল শরীর গঠনকারী খাবার। এটা বৃদ্ধি ও বিকাশ, দেহের কোষ- কলাগুলোর গঠন, রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত, বিপাকীয় ও পাচক এনজাইম ও নির্দিষ্ট হরমোনের উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয়। প্রোটিন অ্যামিনো অ্যাসিড নামে পরিচিত ছোট ছোট একক দ্বারা গঠিত। সব মিলিয়ে ২২টি অ্যামিনো অ্যাসিড আছে, যার মধ্যে ৮টি অ্যামিনো অ্যাসিড আছে, যা আমাদের শরীর তৈরি করতে পারে না, তাই খাদ্যের মাধ্যমে সরবরাহ করতে হয়। এগুলোকে ইসেনশিয়াল অ্যামিনো অ্যাসিড বলে। বাকি অ্যামিনো অ্যাসিড শরীরের অভ্যন্তরে তৈরি হয়, যা নন- ইসেনশিয়াল অ্যামিনো অ্যাসিড বলে।

** ১ গ্রাম প্রোটিন ৪ কিলোক্যালরি শক্তি দেয়৷

প্রোটিনের কাজ:
  • টিস্যুসমূহের বৃদ্ধি, রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতের জন্য প্রয়োজন।
  • এনজাইম, হরমোন, অ্যান্টিবডি, হিমোগ্লোবিন ইত্যাদি উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয়।
  • রক্ত জমাট বাধতে সাহায্য করে
  • প্রয়োজনে শক্তি সরবরাহ করে

** প্রোটিনের অভাবজনিত রোগের নাম প্রোটিন এনার্জি ম্যালনিউট্রিশন, যার মধ্যে আছে কোয়াশিওরকর এবং ম্যারাসমাস। নিচের ছবিতে এদের নমুনা দেখানো হল:

উৎস
  • মাংস, মুরগি, মাছ, ডিম
  • সুখ, পনির, পনির, দই
  • সয়াবিন, মটর, ডাল,
  • সিরিয়াল, বাদাম এবং তৈলবীজ যেমন ভিল, চীনাবাদাম ইত্যাদি।

বিশেষ বৈশিষ্ট্য

(i) পশুর প্রোটিন, অর্থাৎ, মাংস, ডিম, দুধ, ইত্যাদি থেকে প্রাপ্ত প্রোটিনগুলো উদ্ভিজ্জ প্রোটিনে, যেমন, ডাল, সিরিয়াল ইত্যাদি থেকে ভালো, এর কারণ হল উদ্ভিদ উৎস থেকে পাওয়া প্রোটিনে সমস্ত প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে না।

(ii) প্রতিটি খাৰাৱে উদ্ভিদ প্রোটিনের দুই বা ততোধিক উৎস অন্তর্ভুক্ত করলে প্রোটিনের গুণমান উন্নত হয়।

শরীরে প্রোটিনের চাহিদা

প্রতিদিন প্রোটিন গ্রহণের প্রস্তাবিত পরিমাণ হল শরীরের ওজনের প্রতি কিলোগ্রামে প্রায় ১ গ্রাম। উদাহরণ: একজন ব্যক্তির যদি ৬০ কিলোগ্রাম হয়, তাহলে তার প্রতিদিন ৬০ গ্রাম প্রোটিনের প্রয়োজন হবে। এটি একটি ডিম বা একটি ডিমের আকারের এক টুকরো মাংসের সমান। শিশু, কিশোরী এবং গর্ভবর্তী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের প্রোটিনের চাহিদা নীচে দেওয়া হল:

শিশু: ৩০-৫০ গ্রাম

কিশোর: ৬০-৭৫ গ্রাম

প্রাপ্তবয়স্ক ৬০-৭০ গ্রাম

গর্ভবর্তী এবং স্তন্যদানকারী : ৯০ গ্রাম

দ্রষ্টব্য: 

যখন শরীর তার শক্তির চাহিদা মেটাতে পর্যাপ্ত কার্বোহাইড্রেট বা চর্বি পায় না, তখন এই ক্যালোরি সরবরাহ করে শরীরে জমে থাকা প্রোটিন। যখন প্রোটিন শক্তির জন্য ব্যবহৃত হয় তখন তারা তাদের নিজস্ব গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর জন্য উপলব্ধ হয় না।

 

পুষ্টি উপাদান, উৎস ও গুরুত্ব

 

গ. লিপিড/ স্নেহ /তেল (Lipid/fat):

লিপিড নামেও পরিচিত চর্বি এবং ভেল প্রাণী এবং উদ্ভিদ উভয় উৎস থেকে প্রাপ্ত। চর্বি শক্তি জোগায়, শরীরের কোষ তৈরি করে, শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়তা করে, শরীরের ক্রিয়াকলাপে সহায়তা করে এবং ফ্যাট সলিউবল প্রবণীয় ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে এর শোষণ ও কাজ সহজতর করে। রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে, ফ্যাটি অ্যাসিডগুলোকে স্যাচুরেটেড এবং আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিডে ভাগ করা হয়।

সাধারণত স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত লিপিডগুলো ঘরের তাপমাত্রায় শক্ত থাকে এবং এর মধ্যে আছে প্রাণীর চর্বি (মাখন, ঘি) এবং গ্রীষ্মমন্ডলীয় তেল (পাম, নারকেল)। স্যাচুরেটেড ফ্যাট হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিডে ঘরের তাপমাত্রায় তরল থাকে। এর মধ্যে রয়েছে মনোস্যাচুরেটেড এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট যা সূর্যমুখী, ভুট্টা, সয়াবিন এবং জলপাই তেলের মতো উयি তেলে পাওয়া যায়। আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিতে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।

**১ গ্রাম চর্বি ১ কিলোক্যালরি শক্তি দেয়।

স্নেহজাতীয় খাবারের কাজ :
  • শক্তির কেন্দ্রীভূত উৎস প্রদান কর
  • শক্তির জন্য প্রোটিনের ব্যবহার কমিয়ে দাও
  • চর্বি দ্রবণীয় ভিটামিন (A, D, B, K) শরীরে বহন করে এবং এই ভিটামিনগুলোকে শোষণে সাহায্য করে
  • শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। ত্বকের নিচের চর্বির স্তর শরীরের ভাগ সংরক্ষণে
    সাহায্য করে
  • নির্দিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর জন্য একটি কুশন হিসাবে কাজ কর
  • টিস্যুর বৃদ্ধিতে সাহায্য করে
উৎস:

রান্নার তেল, ছি, সাখন তৈলবীজ, বাদাম; মাংস, মুরগি, মাছ, ডিম; পুরো দুধ, পনির

বিশেষ বৈশিষ্ট্য:

(i) চর্বি টেক্সচার উন্নত করে সেইসাথে শোষণ করে এবং স্থান ধরে রাখা যা খাবারকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।

(ii) চর্বিগুলোর এমন বৈশিষ্ট্য আছে, যা পেটে বেশিক্ষণ থাকতে পারে এবং ক্ষুদামন্দার অনুকৃতি দীর্ঘায়িত করতে সহায়তা করে।

 শরীরে লিপিডের চাহিদা:

লিপিড শরীরে উচ্চ পরিমাণে শক্তি সরবরাহ করে; ১ গ্রাম চর্বি ৯ কিলোক্যালরি উৎপন্ন করে। তেল দৈনিক গ্রহণকৃত মোট কিলোক্যালরির ৩০% এর বেশি হওয়া উচিত নয়। স্যাচুরেটেড ফ্যাট গ্রহণের পরিমাণ প্রতিদিন মোট চর্বি খাওয়ার ১০% বা তার কম হওয়া উচিত। কোলেস্টেরল গ্রহণ ৩০০ মিলিগ্রামের বেশি হওয়া উচিত নয়।

 

পুষ্টি উপাদান, উৎস ও গুরুত্ব

 

২) মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস (Micronutrients):

এগুলো শরীরে অল্প পরিমাণে প্রয়োজন এবং এর মধ্যে আছে: ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ।

ক. ভিটামিন (Vitamins):

ভিটামিন হল জৈব যৌগ যা দেহে নির্দিষ্ট বিপাকীয় কার্য সম্পাদন করে। ভিটামিনের দুটি রূপ আছে :

ফ্যাট সলিউবল (চর্বিতে দ্রবণীয়) ভিটামিন (Fat soluble vitamin) :

এগুলো শরীরে সঞ্চিত হয়। এর মধ্যে আছে ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে। ফ্যাট সলিউবল ভিটামিন শরীরের টিস্যু এবং তাদের কাজের বিকাশ এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয়; উদাহরণস্বরূপ: চোখ (ভিটামিন এ), হাড় (ভিটামিন ডি ), পেশী এবং রক্ত জমাট বাধা ( ভিটামিন কে), কোষের সুরক্ষা (ভিটামিন ই), এনজাইমগুলোর সংশ্লেষণ এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টির শোষণ। ফ্যাট সলিউবল ভিটামিনের উৎসগুলোর মধ্যে আছে গাজর, টমেটো, লিভার, কিডনি, হার্ট, দুধ এবং দুধের পণ্য এবং শাক।

ওয়াটার সলিউবল (পানিতে দ্রবণীয়) ভিটামিন (Water soluble vitamin) :

এগুলো শরীরে সংরক্ষণ হয় না। এর মধ্যে আছে ভিটামিন সি (অ্যাসকরবিক অ্যাসিড) এবং বি কমপ্লেক্স গ্রুপ। তাদের কার্যাবলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য শক্তি উৎপাদন করা, মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টসের মেটিবলিজমে সাহায্য করে এবং লোহিত রক্ত কণিকা সংশ্লেষণ করে। পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিনের উৎসের মধ্যে আছে ফলমূল, রঙ্গীন শাক-সবজি, শস্যদানা, মাংস, মাছ, হাঁস-মুরগি এবং প্রক্রিয়াজাত খাদ্যশস্য। সাইট্রাস ফল ভিটামিন সি-এর ভালো উৎস।

ভিটামিনের প্রয়োজনীয়তা
  • পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন শরীরে জমা হয় না এবং প্রতিদিন খেতে হয়।
  • চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিনগুলো যকৃতে সঞ্চিত থাকে এবং প্রতিদিন গ্রহণ করতে হয় না, এই ভিটামিনগুলোর অত্যধিক গ্রহণ বিষাক্ত

শরীরের সঠিক কার্যকারিতার জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং তাদের উৎস

 

পুষ্টি উপাদান, উৎস ও গুরুত্ব

পুষ্টি উপাদান, উৎস ও গুরুত্ব

পুষ্টি উপাদান, উৎস ও গুরুত্ব

 

খ. খনিজ পদার্থ (Minerals):

বৃদ্ধি, বিকাশ, পানির ভারসাম্য এবং স্নায়ুবিক সকল ক্রিয়াকলাপসহ শরীরের বিভিন্ন প্রক্রিয়ার স্বাভাবিক কার্যকারিতার জন্য খনিজ প্রয়োজন।

অত্যাবশ্যকীয় খনিজ পদার্থ, উৎস, কাজ এবং অভাবজনিত রোগ

 

পুষ্টি উপাদান, উৎস ও গুরুত্ব

পুষ্টি উপাদান, উৎস ও গুরুত্ব

 

শরীরের বিভিন্ন কাজের সাথে জড়িত অন্যান্য খনিজগুলো হল ক্রোমিয়াম, ভাষা, ফ্লোরাইড, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, মলিবডেনাম, নিকেল, সোডিয়াম এবং সেলেনিয়াম।

 

পুষ্টি উপাদান, উৎস ও গুরুত্ব

 

গ. পানি (Water):

পানি আমাদের শরীরের প্রধান উপাদান। এটি শরীরের ওজনের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ গঠন করে। পানি সমস্ত কোষে উপস্থিত, সমস্ত জীবন্ত টিস্যুর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি টিস্যু এবং অঙ্গগুলোকে ঘিরে রাখা এবং ক্ষত হওয়া থেকে সুরক্ষা দেয়। পানি হজম, শোষণ এবং শরীরে পুষ্টি পরিবহনে সাহায্য করে। এটি প্রস্রাবের আকারে অবাঞ্ছিত পদার্থ নির্গত করতে সাহায্য করে এবং ঘামের মাধ্যমে শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখা। আমাদের প্রতিদিন ৬-৮ গ্লাস পানি পান করা উচিত। আমরা পানি রূপে দুধ, ফলের রস ইত্যাদিও গ্রহণ করতে পারি। বিশেষজ্ঞগণ একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির জন্য প্রতিদিন ন্যূনতম ২-৩ লিটার পানি পান করার উপদেশ দিয়ে থাকেন। শিশুদের তাদের শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী পানি পান করা উচিত।

পানির প্রয়োজনীয়:
  • শরীরের অভ্যন্তরে পুষ্টি পরিবহণ করে
  • রক্ত, লালা, অশ্রু এবং ঘাম তৈরি করে
  • হজম প্রক্রিয়া সক্রিয় করে,
  • মুখ ও ফুসফুসকে আর্দ্র রাখা
  • ত্বককে আর্দ্র ও শীতল রাখা
  •  অসুস্থতার সময় যখন তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে যা হয়, যদি বমি বা ভাররিয়া হয়, উভয় ক্ষেত্রেই বিশেষ করে শিশুদের ডিহাইড্রেশন হতে পারে। তখন শরীরে পানির অভাব পানি দিয়েই পুরণ করতে হয়।
  • অন্যদানকালে দুধ উৎপাদনের জন্য অতিরিক্ত পানির প্রয়োজন হয়।
  • খেলাধুলার মতো নির্মিত কার্যকলাপের পরে প্রচুর পানি পান করা উচিত।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment