আজকে আমরা আলোচনা করবো মানবদেহের উচ্চতা ও ওজন পরিমাপ করা। যা পেশেন্ট কেয়ার টেকনিক ১ এর সাধারণ স্বাস্থ্য পরীক্ষা অংশের অন্তর্গত।

মানবদেহের উচ্চতা ও ওজন পরিমাপ করা
সেবাগ্রহীতা ব্যক্তির উচ্চতা ও ওজন দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, ফেগুলো অন্যান্য ভাইটাল সাইন বা অত্যাবশ্যকীয় লক্ষণগুলোর সাথে হাসপাতাল বা ক্লিনিকে যেকোনো কাজের শুরুতেই মেপে নিয়ে রেকর্ড করতে হয়। স্বাস্থ্যের ভালোমন্দের অনেকখানিই নির্ভর করে উচ্চতা ও ওজন অনুযায়ী শারীরিক ভারসাম্যের উপর। ওজন বেশি হলে শারীরিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। ফলে দেহে ৰাসা ৰাখে নানা রোগ। তাই উচ্চতার সাথে ভারসাম্য রেখে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত। এজন্য অসুস্থ রোগী ছাড়া সুস্থ ব্যক্তির জন্যেও নিয়মিত ওজন মাপা এবং উচ্চতা অনুযায়ী আদর্শ ওজন বজায় রাখা অতীব গুরুত্বপূর্ণ।

উচ্চতা ও ওজন পরিমাপ করার উপায়:
উচ্চতা ও ওজন পরিমাপ করে একজন মানুষের স্বাস্থ্যমান জানা যায়। তার বয়স অনুযায়ী উচ্চতা ও ওজনে কোনো তারতম্য আছে কিনা তা অবগত হওয়া যায়। বিশেষ করে নিউট্রিশনাল স্ট্যাটাস খুব সহজেই অনুমান করা যায়। উচ্চতা ও ওজন হলো স্বাস্থ্য ঝুঁকির একটি মূল ইন্ডিকেটর। ওজনকে সাধারণত পাউন্ড অথবা কিলোগ্রাম হিসেবে দেখা হয় এবং উচ্চতাকে মিটার/সেন্টমিটার/ইঞ্চিতে লেখা হয়। ওজন পরিমাপের জন্য ওজন পরিমাপক যন্ত্র পাওয়া যায়। ওজন পরিমাপক যন্ত্র মূলত দু রকমের, যথা: এনালগ ও ডিজিটাল। কিন্তু নিয়ম মেনে এই মেশিনের উপর সোজা হয়ে দাড়ালে মিটার বা ডিসপ্লে প দেখে সহজেই ওজন দেখা যায়। তবে বাসা কিংবা স্বাস্থসেবা কেন্দ্রে যেখানেই হউক না কেনো ওজন মাপার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় নজর দেওয়া উচিৎ, যেমন:

যন্ত্রটি কার্পেট, ম্যাট বা মেঝেতে সমান জায়গায় রাখতে হবে। সেবাগ্রহীতাকে ভারী জামাকাপড় পরিহার করার জন্য অনুরোধ করতে হবে। মুঠোফোন, মানিব্যাগ, ভ্যানিটি ব্যাগ, ফাইল বা অন্য যেকোনো ব্যক্তিগত সরলাম বা সঠিক ওজনের তারতম্য সৃষ্টি করতে পারে সেগুলো অন্যত্র রেখে মেশিনের উপর দাড়ানোর জন্য নির্দেশনা দিতে হবে। ক্ষুতা না পরে ওজন মাপা শ্রেয়। পেট ভরে খেয়েই বা অনেক পানি বা তরল পান করার পরপর ওজন মাপা উচিৎ নয়। ব্যায়ামের পরপরও ওজন মাপবেন না। নারীদের ক্ষেত্রে পিরিয়ড বা মাসিকের সময় বাদ দিয়ে ওজন মাপতে বলা উচিৎ। যাঁরা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তাঁরা ওজন মেপে একটা চার্ট তৈরি কর।

অনেক যন্ত্র পাউন্ডে ওজন দেখায়। পাউন্ডকে কিলোগ্রামে রূপান্তর করতে প্রায় ওজনকে ০.৪৫ দিয়ে গুণ করতে হবে। ওজন পরিমাণের পর তার চার্টে লিপিবদ্ধ করতে হবে। আবার উচ্চতা মাপার জন্য দরকার হয় একটি উচ্চতা পরিমাপক ফিতা বা উল্লম্ব স্ট্যান্ডের যেখানে মিটার বা সেন্টিমটার বা উভয় ক্ষেলে দাগ কাটা থাকে। উচ্চতা মাপার জন্য সোজা হয়ে স্বাভাবিকভাবে দাঁড়াতে হয়। ফুট এবং ইঞ্চিতেও উচ্চতা মাপা হয়ে থাকে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে মিটার স্কেলে উচ্চতার মান আমাদের জানতে হয়। যেমন শরীরের বিএমআই সাপার ক্ষেত্রে। তবে বর্তমানে উন্নত প্রযুক্তির সেন্সর সম্বলিত মেশিন পাওয়া যায় যেগুলো নিমিশেই শরীরের ওজন, উচ্চতা, বিএমআই প্রভৃতি পরিমাণ করতে পারে সঠিকভাবে।
আরও দেখুনঃ