আজকে আমরা আলোচনা করবো মানবদেহে হৃদপিণ্ড। যা পেশেন্ট কেয়ার টেকনিক ১ এর বেসিক হিউমান বায়োলোজি ও এর প্রয়োগ অংশের অন্তর্গত।

মানবদেহে হৃদপিণ্ড
হৃদপিণ্ড হল হৃদপেশী দিয়ে তৈরি ত্রিকোণাকার ভেতরে ফাঁপা প্রকোষ্ঠযুক্ত পাম্পের মত যন্ত্র যা সংকোচন ও প্রসারণের মাধ্যমে সারা দেহে রক্ত সঞ্চালিত করে। একজন সুস্থ মানুষের জীবদ্দশায় হৃদপিণ্ড গড়ে ২৬০০ মিলিয়ন বার স্পন্দিত হয়ে প্রতিটি নিলয় থেকে প্রায় ১৫৫ মিলিয়ন লিটার রক্ত বের করে দেয়। একটি হৃদপিণ্ডের ওজন প্রায় ৩০০ গ্রাম। মহিলাদের হৃদপিন্ড পুরুষের চেয়ে এক-তৃতীয়াংশ ওজনে কম হয়।
হৃদপিন্ডের অবস্থান ও হৃদপিন্ড ৰক্ষ পহারে মধ্যচ্ছদার উপর এবং দুই ফুসফুসের মাঝ বরাবর বামদিকে একটু বেশি বাঁকা হয়ে অবস্থান করে। এর পোড়া (Base) চওড়া ও উপরের দিকে থাকে এবং সুঁচালো শীর্ষদেশ (Apex) নিচের দিকে পঞ্চম পাঁজরের ফাকে (Sth inter costal space), বুকের বাঁ দিকে (Nipple) এর ১/২ ইঞ্চি নিচে ও পিছনে থাকে। এটি স্টারনাস (Sternum) ও রিপুলের (Ribs) পেছনে অবস্থিত।

হৃদপিণ্ডের গঠন:
হৃদপিণ্ডের লেয়ার (Layer) ৩টি। বাইরে পেরিকার্ডিয়াম। মাঝে মাইওকার্ডিয়াম (Myocardium) এবং ভিতরে এণ্ডোকার্ডিয়াম (Endocardium) ।
হৃদপিণ্ড একটি দ্বিস্তরী পেরিকার্ডিয়াম নামক পাতলা ঝিরিতে আবৃত। এর বাইরের স্তর প্যারাইটাল (Parietal) এবং ভিতরেরটি ভিসেরাল পেরিকার্ডিয়াম (Visceral pericardium), দুই স্তরের মাঝখানে অবস্থিত তরুল পদার্থ হৃদপিণ্ডের সংকোচন সহজসাধ্য ও নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি দেখতে লালচে রংয়ের ও ত্রিকোণাকার।
মানুষের হৃদপিন্ড সম্পূর্ণভাবে চারটি প্রকোষ্ঠে বিভক্ত। উপরের দুটিকে ডান ও বাম অলিন্দ (Right & left ventricle) এবং নিচের দুটিকে ডান ও বাম নিলয় থাকে। ৰাম অপেক্ষা ডান নিলয়ের প্রাচীর প্রায় তিন গুণ পুরু থাকে। অলিন্দ ও নিলয় উভয়ে লম্বালম্বিভাবে যে পর্দা (Septum) দিয়ে বিভক্ত থাকে তাদের যথাক্রমে –

ক) অলিন্দ পর্দা (Inter-atrial soptum) এবং
খ) আন্তঃ নিলয় পদ (Inter ventricular septum) বলে।
ডান অলিন্দ ও ডান নিলয়ের সংযোগকারী ছিদ্র ট্রাইকাস্পিড কম্পাটিকায় (Tricuspid valve) সংরক্ষিত থাকে। বাম অলিন্দ ও বাস নিলয়ের মধ্যবর্তী ছিদ্রপথের কপাটিকা বাইকাম্পিড কপাটিকা (Bicuspid valve) নামে পরিচিত। এ উভয় ধরনের কপাটিকা নিনর প্রাচীরের মাংসল অভিক্ষেপ রূপী প্যাপিলারী পেশি (Papilary muscle) করভি টেন্ডেনি (Cordae tendinae) নামক তত্ত্ব দিয়ে যুক্ত থাকে।

ডান নিলয় থেকে উদ্ভূত পালমোনারী ধমনীর ছিদ্রপথে এবং ৰাম নিলয় থেকে সৃষ্ট অ্যাওটার মুখের কপাটিকা দুইটি অর্ধচন্দ্রাকার (Semilunar)। এরা রক্তকে পেছনদিকে প্রবাহিত হতে বাধা দেয়। অলিন্দে আগত শিরাগুলোর প্রবেশ পথ কপাটিকাবিহীন। এপিকার্ডিয়ামে প্রায়ই চর্বি লেগে থাকে। মায়োকার্ডিয়াম হৃদপিন্ডের সংকোচনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। হৃদপিন্ডের প্রকোষ্ঠগুলো এডেকার্ডিয়ানে পঠিত। এ স্তর কপাটিগুলোকেও বেষ্টন করে রাখা এবং প্রধান রক্তবাহিকাগুলোর অন্তঃস্থ স্তরের সাথে অবিচ্ছিন্ন।
আরও দেখুনঃ
1 thought on “মানবদেহে হৃদপিণ্ড”