আজকের আলোচনার বিষয়ঃ মিডিয়া অফ কমিউনিকেশন বা যোগাযোগের মাধ্যম। যা পেশেন্ট কেয়ার টেকনিক ১ এর কমিউনিকেশন এন্ড কাউন্সেলিং অংশের অন্তর্গত।

মিডিয়া অফ কমিউনিকেশন বা যোগাযোগের মাধ্যম
মিডিয়া হ’ল যোগাযোগ চ্যানেল বা সরঞ্জাম যা তথ্য বা ডেটা সঞ্চয় এবং সরবরাহ করার জন্য ব্যবহৃত হয়। আধুনিক যুগে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ‘মিডিয়া’ ও ‘চ্যানেল’ শব্দটি প্রায়শই সমার্থক শব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
সহজে বলা চলে যে, যোগাযোগের মাধ্যম হচ্ছে যোগাযোগ প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত সকল চ্যানেল বা সিস্টেমের একটি সম্মিলিত নাম যার মাধ্যমে তথ্য আদান প্রদান করা হয়ে থাকে। উদাহরণ হিসেবে মোবাইল, টেলিভিশন, ইন্টারনেট ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে গণমাধ্যম যোগাযোগ ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।

এ ধরনের যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সংবাদ পত্র, রেডিও-টেলিভিশন ও ইলেকট্রিক মিডিয়া। তাছাড়া সোশ্যাল মিডিয়া বর্তমানে একটি আলোচিত যোগাযোগ মাধ্যম। সোশ্যাল মিডিয়ার মধ্যে বর্তমানে ফেসবুক, টুইটার, গুগল প্লাস, ইনষ্টাগ্রাম ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। আর বার্তা আদানপ্রদানের ক্ষেত্রে- ইমো, ম্যাসেঞ্জার, হোয়াট্স অ্যাপ, ভাইভার, স্কাইপি ইত্যাদি অ্যাপগুলো ভালো অবস্থানে আছে।
বর্তমান লিখিত যোগাযোগ ব্যবস্থায় ইলেকট্রিক মেইল বা ই-মেইল গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। ফ্যাক্স, টেলিফোনও ব্যবহার করা হচ্ছে আগের মত। যোগাযোগ ব্যবস্থায় মোবাইল কমিউনিকেশন এনেছে বিপ্লব। প্রতিটি ঘরে ঘরে মোবাইল ডিভাইসের আধিক্য চোখে পড়ার মত। মোবাইল কমিউনিকেশন ব্যবস্থা যোগাযোগ ব্যবস্থাকে নিয়ে এসেছে হাতের মুঠোয়।

নিচে প্রাত্যহিক জীবনে ব্যবহৃত কয়েকটি অতি পরিচিত যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল :
১। লেটার:
লেটার বা চিঠিপত্র যোগাযোগের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও বহুল ব্যবহৃত মাধ্যম। নানা প্রয়োজনে
আমাদেরকের চিঠিপত্র লিখতে হয়। বিষয়বস্তুর উপর নির্ভর করে একে মূলত তিন ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে
যথা: ব্যক্তিগত, সাময়িক ও ব্যবহারিক। ব্যক্তিগত পত্র সাধারণত আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যে লেখা
হয়। আবার ব্যবহারিক পত্রাদি সাধারণত আবেদন-নিবেদন, অভাব-অভিযোগ, চাকরি-বাকরি ইত্যাদি ক্ষেত্রে
লেখা হয়।
২। রিপোর্ট:
এর বাংলা প্রতিশব্দ হলো প্রতিবেদন। রিপোর্ট হলো একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যকে কেন্দ্র করে একদল সুনির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে লিখিত বা মৌখিক আকারে কোনো কিছু দাখিল করা। প্রতিবেদনের সারমর্ম মৌখিক আকারে প্রকাশ করা যেতে পারে, কিন্তু পূর্নাজ্ঞ বিবরন সাধারণত লিখিত আকারেই হয়ে থাকে।
৩। ই-মেইল:
ই-মেইল তথা ইলেক্ট্রনিক মেইল হল ডিজিটাল বার্তা যা কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্রেরণ করা হয়। এই ব্যবস্থায় একজন প্রেরক ও প্রাপক বিভিন্ন প্রয়োজনে লিখিত বার্তা কম্পিউটার ও ইন্টারনেট টেকনোলোজির মাধ্যমে নিমিশেই আদান-প্রাদন করতে পারেন।
কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ছাড়াও এই সুবিধা পেতে হলে অবশ্যই প্রয়োজন হয় একটি ই-মেইল আইডি বা ঠিকানার। ইমেইল ঠিকানা দুইটি অংশে বিভক্ত। প্রথম অংশটি হল ব্যবহারকারীর নাম। এর ঠিক পরপরই থাকে @ চিহ্নটি। তার পরে থাকে সংশ্লিষ্ট ব্যবহারকারীর প্রতিষ্ঠানের নাম। যেমন: abc@cde.com এই ঠিকানাটিতে abc হল ব্যবহারকারী নাম, cde.com হল ব্যবহারকারীর মেইল সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের নাম। জনপ্রিয় ই-মেইল সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে গুগল, ইয়াহু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

৪। টেলিফোন বা মোবাইল:
বর্তমান যুগের সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত যোগাযোগ মাধ্যম হচ্ছে মোবাইল কিংবা টেলিফোন। তবে আনুষঙ্গিক অনেক সুবিধাদির জন্য মোবাইল ব্যবস্থাটিই বেশি জনপ্রিয়। টেলিফোন বা মোবাইল মানুষের মুখের কথা যুগপৎ প্রেরণ ও গ্রহণের জন্য ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক যন্ত্র, যার মাধ্যমে একে অপরের থেকে বহু দূরে অবস্থিত একাধিক ব্যক্তি মৌখিক যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেন। এগুলো সস্তা, সহজে ব্যবহারযোগ্য এবং এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে কন্ঠস্বরের মাধ্যমে ব্যক্তিগত যোগাযোগ স্থাপন করা যায়; এই সমস্ত সুবিধা অন্য কোনোও মাধ্যমে সম্ভব নয়।
৫। সোশ্যাল মিডিয়া:
এটিকে এক কথায় বলা যায় যে এটি এমন ইন্টারনেট ভিত্তিক ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশান যার মাধ্যমে ইউজার কনটেন্ট (টেক্সট, ইমেজ,অডিও, ভিডিও, ইনফর্মেশন ইত্যাদি) বানাতে ও শেয়ার করতে পারে এবং সে তার মতামত জানাতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া গণযোগাযোগের একটি বৃহৎ অংশ দখল করে আছে। কয়েকটি জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়ার মধ্যে ফেইসবুক, টুইটার, ইউটিউব ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
৬। বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মঃ
এছাড়াও কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, ওয়েবসাইট ও রিসোর্স আছে, যা কাজে লাগিয়ে অনলাইনে যোগাযোগ করা যায়। এর মধ্যে বিভিন্ন অনলাইন ভিত্তিক যোগাযোগ মাধ্যম উল্লেখযোগ্য।
আরও দেখুনঃ