যোগাযোগের প্রকারভেদ

আজকের আলোচনার বিষয়ঃ যোগাযোগের প্রকারভেদ। যা পেশেন্ট কেয়ার টেকনিক ১ এর কমিউনিকেশন এন্ড কাউন্সেলিং অংশের অন্তর্গত।

 

কার্যকর যোগাযোগ বলতে কি বুঝায়?

 

যোগাযোগের প্রকারভেদ

যোগাযোগ বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে। বিভিন্ন দৃষ্টিকোনো থেকে এটিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। যোগাযোগের একটি সহজতম প্রকারভেদ হচ্ছে নিম্নরূপ:

১। Formal (ফরমাল) বা আনুষ্ঠানিক:

আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ মূলত কোনো পেশাগত বা দাপ্তরিক ক্ষেত্রে তথ্য আদান প্রদানকে বোঝায়। এক্ষত্রে যোগাযোগের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে হয় খুব সতর্কতার সাথে। অফিসিয়াল মিটিং, দাপ্তরিক আদেশ বা পরিপত্র, রিপোর্ট প্রভৃতি এই ধরনের যোগাযোগের উদাহরণ। এ ধরনের ক্ষেত্রে কথা ৰলা বা সার্বিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে ভাষাগত, আচরণগত, পরিবেশগত বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা মেনে চলতে হয়।

 

google news logo
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

২। Informal (ইনফরমাল) বা অনানুষ্ঠানিকঃ

এটি একটি নিত্ত নৈমত্তিক ও স্বাভাবিক যোগাযোগের প্রকারভেদ যেখানে আমাদেরকে খুব বেশি পেশাগত আচরণ অনুসরণ করতে হয়না। সুনির্দিষ্ট অফিসিয়াল বাধ্যবাদকতা না থাকায় এ ধরনের যোগাযোগ সাধারণত খুবই সতঃস্ফূর্ত ও স্বাভাবিক।

৩। Verbal (ভারবাল) বা মৌখিক:

আমরা আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে সবচেয়ে বেশি যে ধরনের যোগাযোগ করে থাকি, সেটি হচ্ছে ভার্বাল বা মৌখিক যোগাযোগ। মৌখিক যোগাযোগ যেভাবে স্থাপিত হয়ে থাকে সেগুলো হলো-

(ক) সামনা-সামনি সংলাপ বা আলাপ আলোচনা।

(খ) সভা সমাবেশ।

এটি আবার আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক এই দুই ভাবে বিভক্ত হতে পারে।

 

যোগাযোগ ব্যবস্থার উপাদানসমূহ

 

৪। নন ভারবাল (Non-verbal) বা অ-মৌখিক যোগাযোগ:

অ-মৌখিক যোগাযোগগুলো হলো-

(ক) একাধিক ব্যক্তির মধ্যে অনভঙ্গি বা শারীরিক ভাষা (সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ)

(খ) অভিব্যক্তি প্রকাশ।

(গ) হাত নাড়াচাড়া।

(ঘ) মাথা নাড়ানো।

(ঙ) বিশেষ পতাকা উত্তোলন।

(চ) সাংকেতিক চিহ্ন দেখানো।

৫ । Written (রিটেন) বা লিখিত:

লিখিত যোগাযোগও মৌখিক যোগাযোগের মত প্রয়োজনভেদে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক এই দুই রকমের হতে পারে। লিখিত যোগাযোগগুলো হলো: প্রতিবেদন, বুলেটিন ও সাময়িকী বা ম্যাগাজিন, পরিপত্র জারি, নিউজ বা বার্তা, চিঠি-পত্র প্রভৃতি।

 

যোগাযোগ ব্যবস্থার উপাদানসমূহ

 

৬| Visual (ভিজ্যুয়াল) বা দৃষ্টি সংক্রান্তঃ

সম্পানুযায়ী, ভিজ্যুয়াল যোগাযোগ হ’ল দক্ষতার সাথে কার্যকরভাবে অর্থ তৈরি করার জন্য অন্যকে চিত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা। ইনফোগ্রাফিক্স, ইন্টারেক্টিভ কন্টেন্ট, মোশন গ্রাফিক্স এরকম কয়েকটি নাম ভিজ্যুয়াল যোগাযোগের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে। আবার এর সাথে, শব্দ বা অডিও সংযোজন করে যে ধরনের যোগাযোগ স্থাপন করা হয়, তাকে বলা হয় অডিও-ভিজুয়াল (Audio Visual ) কমিউনিকেশন।

যোগাযোগের আরো কিছু ধরন: যোগাযোগের উপরোক্ত প্রকারভেদ ছাড়াও আরো কিছু প্রকারভেদ রয়েছে।
যেমন:

যোগাযোগ ২ প্রকারঃ

১। আন্তব্যক্তিক যোগাযোগ

২। গণযোগাযোগ

আন্তব্যক্তিক যোগাযোগ আবার ২ প্রকারঃ

১। দুইজনের মধ্যে যোগাযোগ

২। দলীয় যোগাযোগ

নিচে এগুলো সম্পর্কে অতি সংক্ষেপে আলোচনা করা হল।

 

 যোগাযোগ বা কমিউনিকেশন

 

আন্তব্যক্তিক যোগাযোগ:

আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ হচ্ছে মুখোমুখি, বাচনিক এবং অবাচনিক উপায়ে দুই বা দুইয়ের অধিক ব্যক্তির মধ্যে তথ্য, ধারণা ও অনুভূতি বিনিময় প্রক্রিয়া:

আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগের বৈশিষ্ট্য:

  •  আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ ব্যক্তির পরিবেশ, সামাজিক রীতিনীতি, মূল্যবোধ, অনুভুতি, দৃষ্টিভঙ্গি ইত্যাদির দ্বারা প্রভাবিত হয়।
  • আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ হচ্ছে নতুন স্বাস্থ্য আচরণের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো এবং স্বেচ্ছায় স্বাস্থ্য আচরণের চর্চা চালিয়ে যাওয়া।
  • আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ এবং কাউন্সেলিং করা হয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে, স্বাস্থ্য সেবাপ্রদানকারী, সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে এবং কমিউনিটির সদস্যদের মধ্যে যা আসলে সর্বোচ্চ সেবা পাওয়ার জন্য একটি প্রধান উপাদান।
  •  আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ গণমাধ্যমে উপস্থাপিত/প্রচারিত বার্তা সমূহের পরিপুরক, যা বার্তাকে শক্তিশালী ও বিস্তৃত করে থাকে আবার আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগকে শক্তিশালী করার জন্য তা ব্যবহার করা যেতে পারে।
দুইজনের মধ্যে যোগাযোগ:

দুইজনের মধ্যে যোগাযোগ হচ্ছে এমন ধরনের যোগাযোগ যেখানে একজন সরাসরি আরেকজনের সাথে যোগাযোগ করেন।

 

 যোগাযোগ বা কমিউনিকেশন

 

দলীয় যোগাযোগঃ

ব্যক্তি না একটি হলের সাথে অপর একটি ব্যক্তি বা দলের যোগাযোগই হচ্ছে দলীয় যোগাযোগ। দলীয় যোগাযোগ পদ্ধতি হতে পারে :

  • দলীয় আলোচনা
  • দলীয় সভা
  • বক্তৃতা

গণযোগাযোগ কি?

সমাজের সবার জন্য যোগাযোগ কার্যক্রমকে পণযোগাযোগ বলা যায়। গণযোগাযোগের ক্ষেত্রে বৃহৎ জনগোষ্ঠীর কাছে বার্তা পৌঁছানো এবং তথ্য প্রচারের জন্য বিভিন্ন ধরনের গণমাধ্যম ব্যবহার করা হয়। যেমন- রেডিও, টিভি, পত্রিকা ইত্যাদি। গণযোগাযোগে সাধারণত শ্রোতার সাথে বক্তার প্রত্যক্ষ সংযোগ ঘটে না এবং তাৎক্ষণিক ফিডব্যাক পাওয়া যায় না।

আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিবেচ্য বিষয়:

  • কার্যকরী/ সক্রিয়ভাবে শোনা
  • এমনভাবে প্রশ্ন করা যাতে সেবাগ্রহীতা কথা বলতে উৎসাহিত হয়
  • বাচনিক ও অবাচনিক উৎসাহ প্রদান
  • সেবাগ্রহীতার সাথে সহজ ভাষায় কথা বলা যাতে একে অন্যকে বুঝতে পারে
  •  স্পষ্ট, সঠিক এবং পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রদান
  • ব্যাখ্যাকরণ ও পুনরাবৃত্তিকরণ
  • প্ৰতিবাৰ্তা

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment