আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় রোগীকে টয়লেটিং-এ সহযোগীতা করা – যা দৈনন্দিন কর্মকান্ডে সহযোগিতা এর অন্তর্ভুক্ত।
রোগীকে টয়লেটিং-এ সহযোগীতা করা
স্বাস্থ্যকর্মীরা সাধারণত যেসব রোগীর যত্ন নেয় সেসব রোগী আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের টয়লেট ব্যবহারে কিছু সাহায্যের প্রয়োজন হতে পারে। সে কারণে কেয়ারগিভারগণ রোগীদের নিরাপদে টয়লেট ব্যবহারে সাহায্য করতে পারে এবং এর জন্য অনেক উপায়ই রয়েছে। এটি স্বাচ্ছন্দোর সহিত সম্পন্ন করতে অন্য লোকেরও সহযোগীতা নেয়া যেতে পারে।
টয়লেটিং এর জন্য সহযোগীতার প্রয়োজন হয় কেন?
একজন রোগীর টয়লেটিং-এর জন্য সাহায্য প্রয়োজন হয় তখন-
১। যখন প্রবীণদের পায়খানা করতে সমস্যা হয়।
২। রোগীর আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে ।
৩। রোগী ভীষণ অসুস্থতায় থাকলে ।
৪। রোগীর জ্ঞান হ্রাস পেলে।
৫। অনিয়ন্ত্ৰিত প্ৰসাৰ বা পায়খানা করার কারণে যদি তাদের পোশাক ও চারপাশের আসবাবপত্র ভিজে যায়।
৬। রোগীর বসা থেকে উঠতে অসুবিধা হলে।
৭। রোগীর হাঁটা, ভারসাম্য এবং চলাফেরায় অসুবিধা থাকলে।
৮। রোগীর ঘরে প্রস্রাব বা মলত্যাগের কারণে যদি গন্ধ বা দাগ পড়ে।
ইনকন্টিনেন্স: ইনকন্টিনেন্স সমস্যাটি প্রায়শই ঘটে। এমন একটা সমস্যা যেটি পেশী এবং রামুর সমস্যার কারণে ঘটে যা মুত্রাশয়কে প্রস্রাব ধরে রাখতে বা ছেড়ে দিতে সহায়তা করে। এ অবস্থায় কাশি বা হাঁচির সময় প্রস্রা বের হতে পারে। অথবা রোগীর হঠাৎ প্রসাবের চাপ হতে পারে কিছু সময়মত বরুিমে যেতে পারেন না। এটিই হল ইনকন্টিনেন্স।
সাহায্যকারী টয়লেটের প্রকারভেদ
১। টয়লেট / কমোড, ২। বেডপ্যান / ইউরিনাল, ৩। অপসারণযোগ্য টয়লেট সিট অথবা পোর্টেবল টয়লেট ও কমোড, ৪। হ্যাজাইল এ্যাডজাস্টেবল টয়লেট কমোড

টয়লেট বা কমোড ব্যবহার করতে সাহায্য করা
একজন স্বাস্থ্যকর্মী যখন কারো যত্ন নেন, তখন রোগী যদি বিছানা থেকে উঠতে পারে তাহলে টয়লেট বা কমোড ব্যবহার করা হয়। তবে সেক্ষেত্রেও সেবাকর্মীর কাছ থেকে তার কিছু সহযোগীতার প্রয়োজন হতে পারে। পদ্ধতিগুলো নিম্নরূপ:
১। রোগী কীভাবে দাঁড়াতে এবং নিরাপদে হাঁটতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন সে ব্যাপারে যত্নবান হতে হবে।
২। যদি রোগী কমোড ব্যবহার করে, তাহলে তাদের জিজ্ঞাসা করতে হবে যে, তিনি এটি কোথায়
রাখতে চান।
৩। যদি তিনি টয়লেট বা কমোডে বসতে চান, তাহলে তাদের রেলিং এর মতো নিরাপদ কিছু ধরে
বসতে বলতে হবে।

৪। তখন তাদের কাপড় সরাতে সাহায্য করতে হতে পারে।
৫। টয়লেট বা কমোড ব্যবহার করার সময় তাদের গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে।
৬। প্রয়োজনবোধে তাদের থেকে দূরে সরে যেতে হবে। সাহয্যকারী যদি রুম ছেড়ে যায়, তখন তাদের প্রয়োজন হলে কাছাকাছি থাকতে হবে। টয়লেটের কাজ শেষ হলে পুনরায় সেবাদানকারীর সহযোগিতা প্রয়োজন হলে তা জানাতে বলতে হবে।

এই সময় তাদেরকে:
১। পরিষ্কার করার জন্য টয়লেট পেপার বা ভেজা ওয়াইপস দেওয়া লাগতে পারে।
২। তাদের দাঁড়াতে সাহায্য করা লাগতে পারে।
৩। তাদের জামাকাপড়ঠিক করা বা বোতাম লাগাতে সাহায্য করা লাগতে পারে।
৪। টয়লেট পেপার বা ভেজা ওয়াইপস দিয়ে যদি নিজে পরিষ্কার হতে না পারে তাহলে পরিষ্কার
কাপড় দেওয়া লাগতে পারে।
৫। তাদের হাত ধুয়ে পরিষ্কার করতে সাহায্য করা লাগতে পারে।
৬। মলদ্বার থেকে নুক্রনালীতে (শরীরের যে অংশে প্রস্রাব বের হয়) জীবাণু ছড়ানোর কারণে ইউরিন ইনফেকশন হতে পারে। জীবাণু ছড়ানো এবং সংক্রমণের কারণ রোধ করতে সামনে থেকে পিছনে
মুছতে হবে।
৭। টয়লেটে ভেজা ওয়াইপস বা অন্যান্য পণ্য ক্লাশ করা যাবে না। কাজ শেষ হয়ে গেলে এগুলোকে একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে রাখতে হবে অর্থাৎ এগুলো সরাসরি একটি নির্ধারিত বর্জ্য ধারকে রাখতে হবে।
টয়লেট ব্যবহারকে সহজ করা
নিম্নলিখিত বিষয়গুলো রোগীর টয়লেট ব্যবহারকে সহজ করতে পারে:
১। রোগীকে প্রচুর সময় দিতে হবে, যাতে সে ভাড়াহুড়া না করে।
২। তাদের রুটিন মাফিক অথবা রুটিনের কাছাকাছি একটা সময়ে টয়লেটিং এর ব্যবস্থা করে দিলে।
৩। টয়লেটটি যদি অনেক দূরে হয় তাহলে মার পথে একটি চেয়ার রাখতে হবে, যাতে রোগী সেখানে
বিশ্রাম নিতে পারে।
৪। টয়লেটে আসা -যাওয়ার মেঝে পরিষ্কার ও পিচ্ছিলমুক্ত রাখতে হবে যাতে রোগী পা পিছলে পে
যায়।
৫। রাতে নিরাপদে টয়লেটে পৌঁছাতে একটি আলো জ্বালিয়ে রাখতে হবে।
৬। যদি রোগী তাদের বাথরুমের প্রয়োজনের কথা বলতে না পারে তা হলে কোনো সংকেত অথবা ছবির
মাধ্যমে প্রকাশ করার ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
আরও দেখুন: