আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় রোগ ছড়ানোর কারণ – যা জনস্বাস্থ্য এর প্রাথমিক ধারণা এর অন্তর্ভুক্ত।
রোগ ছড়ানোর কারণ

রোগতাত্ত্বিক অনুশীলনে প্রধানতঃ সংক্রামক ব্যাধি বিস্তারে তিনটি বিষয়কে একত্রে রোগ সৃষ্টির ও সংক্রমণের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। যথাঃ
১। রোগ সৃষ্টিকারী উপাদান (Agent): ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস, পরজীবি, ছত্রাক ইত্যাদি।
২। পোষক: (Host): যেমন: মানুষের দেহ, প্রানীর দেহ ইত্যাদি।
৩। পরিবেশ (Environment): যেমন: অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, স্বাস্থ্য অসচেতন জঙ্গোষ্ঠী প্রভৃতি।
সংক্রমণের ধারা (Chain of Infection) :
এর দ্বারা রোগ সংক্রমণের পরস্পর সম্পর্কিত প্রক্রিয়াকে বোঝানো হয়েছে। সংক্রমণের ধারা নিন্মলিখিত ভাবে প্রদর্শন করা হয় |

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম:
১। স্পর্শ:
বেশ কিছু রোগ স্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়। যেমন স্কেবিস, ছত্রাক জনিত চর্ম রোগ ইত্যাদি।
২। যৌন সংস্পর্শ:
এইডস, সিফিলিস, গনোরিয়া, হেপাটাইটিস (বি, সি), হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস ইনফেকশন যেটি জরায়ুমুখ ক্যান্সারের অন্যতম কারণ, লিমফো গ্রানুলোমা ভেনেরিয়াম, শ্যাংক্রয়েড ইত্যাদি।

৩। খাদ্য ও পানীয়:
টাইফয়েড, পোলিও মায়েলাইটিস, হেপাটাইটিস (এ, ডি), কলেরা, ডায়রিয়া, আমাশয়, বিভিন্ন কৃমি সংক্রমণ।
৪। বায়ু বাহিত:
যক্ষ্মা, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হুপিং কাশি, মেনাওজাইটিস, নিউমোনিয়া, ব্রংকাইটিস, ব্রংকিওলাইটিস,
মাম্পস, রুবেলা, বসন্ত, হাম, করোনা ভাইরাস রোগ।
৫। ভেক্টর বাহিত: মশা:
ডেঙ্গি, চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়াসিস। মাছি: উদরাময়, আমাশয়, ক্রিমি সংক্রমণ, কালাজ্বর, চ্যাগাস ডিজিস, স্লিপিং সিকনেস, চোখের কৃমি (deer fly)।
৬।ত্বকের মাধ্যমে:
কিছু রোগের এজেন্ট সরাসরি ত্বকে ত্বকের সংস্পর্শে ছড়িয়ে পড়তে পারে, যেমন Tinea capitis, ছত্রাক যা দাদ সৃষ্টি করে, Tinea pedis, ছত্রাক যা ক্রীড়াবিদদের পায়ে সৃষ্টি করে এবং impetigo। যাইহোক, এই রোগ সম্ভবত প্রায়ই ফোমাইটের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
কারণগত শ্রেণীবিভাগ:
১। ব্যাকটেরিয়াল: যক্ষ্মা, ধনুস্টংকার, টাইফয়েড, কলেরা।
২। ভাইরাল: ভাইরাল ইনফ্লুয়েঞ্জা, রোটা ভাইরাল ডায়রিয়া, ভাইরাল হেপাটাাাইটিস, এইডস, হাম, রুবেলা।
৩। ছত্রাক জনিত : বিভিন্ন চর্মরোগ, ছত্রাক জনিত ফুসফুস সংক্রমণ, মস্তিষ্ক ও মস্তিষ্ক আবরন সংক্রমণ, মহিলাদের শ্বেতপ্রদর ইত্যাদি।
৪। প্রোটিন জনিত (প্রিয়ন): ম্যাড কাউ, ক্রুজফিল্ড জ্যাকব
সংক্রমণ ঝুঁকি:
ডায়াবেটিস রোগী, জন্মগত স্বল্প রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের সংক্রমণ ঝুুঁকি বেশি। কিছু রোগেও শরীর এর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, যেমন এইডস, যক্ষ্মা, কালাজ্বর, ক্যনসার। তাছাড়া অতি ছোট শিশু এবং অতি বৃৃদ্ধদের সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি।
আরও দেখুন: