রোগ প্রতিরোধের উপায়

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় রোগ প্রতিরোধের উপায় – যা জনস্বাস্থ্য এর প্রাথমিক ধারণা এর অন্তর্ভুক্ত।

রোগ প্রতিরোধের উপায়

 

রোগ প্রতিরোধের উপায়

 

সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ

১। সংক্রামক রোগ জীবাণুর মাধ্যমে হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে শরীরের রোগ প্রতিরোধ করা এবং রোগের জীবাণু ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

২। সুষম খাদ্য গ্রহণ করা

৩। নিরাপদ পানি ব্যবহার করা এবং হাত জীবাণুমুক্ত রাখা

৪। ঘরে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা থাকা জরুরি

৫। বাড়ির আশেপাশে পানি জমতে পারে এমন আবর্জনা যেমন- কৌটা, টায়ার, ফুলের টব ইত্যাদি পরিষ্কার রাখতে হবে। কারণ এতে জমে থাকা পানিতে ডেঙ্গু এবং স্যালেরিয়া রোগের বাহক মশা ডিম পাড়ে।

৬। পঁচি-কাশির সময় টিস্যু, রুমাল বা হাত দিয়ে সুখ ঢাকা, চারপাশের পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন
রাখা।

৭। হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীদের স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে পালন করা ও রোগীকে সেবা দেওয়ার সময় ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষামূলক সরঞ্জাম পরিধান করা।

পানিবাহিতরোগ প্রতিরোধঃ

১। পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধের ভালো একটি উপায় হল পানিতে জীবাণুর বিস্তার রোধ করা।

২। পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত রোগীর মলমূত্র পানিতে না ফেলা ।

৩। আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার্য জিনিসপত্র পানিতে না ধোয়া

৪। যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ও মলমূত্র ত্যাগ করা থেকে বিরত থাকা। কারণ বৃষ্টির সময় উক্ত ময়লা আবর্জনা ও মলমূত্র পানিতে গিয়ে পানি দূষিত হয়।

৫। খাবার আগে এবং পায়খানা ব্যবহারের পরে ভালো করে হাত

৬। পানি ফুটিয়ে পান করা

৭। সর্বোপরি স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাটিন ব্যবহার করা

 

google news logo
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

অসংক্রমক রোগ থেকে সাবধানতা ও প্রতিকার

১।যাদের পরিবারে অসংক্রামক ব্যাধি জনিত রোগ আছে, তাদের উচিত হবে তাদের বিশেষভাবে সচেতন হওয়া। শৈশব থেকেই এ ধরনের পরিবারের সন্তানদের দিকে মনোযোগী হতে হবে।

২।ওজন বেড়ে যাওয়া, অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড বা কোমল পানীয় গ্রহণ, ধূমপান — ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ। তাই এগুলো বর্জনীয়।

৩। ছেলেবেলা থেকে কায়িক শ্রম, ব্যায়াম ও খেলাধুলায় উৎসাহী করা।

৪। কাঁচা শাকসবজি, ফলমুল ও আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে বেশি।

৫। ইদানীং বলা হচ্ছে স্তন ক্যানসার, অস্ত্রের ক্যানসারসহ কিছু ক্যানসারেরও পারিবারিক ইতিহাস গুরুত্বপূর্ণ। আর স্থূলতা, ওজনাধিক্য প্রতিরোধ করা গেলে, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে পারলে এ ধরনের ক্যানসারকেও প্রতিরোধ করা যায়।

৬। পরিবারে মা-বাবার ডায়াবেটিস থাকলে তাদের তরুণী কন্যাসন্তানের গর্ভকালীন ডায়াবেটিসেরও ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই এ ধরনের পরিবারের মেয়েদেরও হতে হবে সচেতন। মুটিয়ে যাওয়া এবং কায়িক শ্রমের অভাব এই ঝুঁকি বাড়াবে। তাই তাদের উচিত সন্তান নেওয়ার আগেই ওজন নিয়ন্ত্রণ করা, নিয়মিত ব্যায়াম করা ও খাদ্যাভ্যাস পাল্টানো। পাশাপাশি নিয়মিত নিজেদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো।

৭।৩৫ বছর বয়সের পর থেকেই বছরে অন্তত একবার রক্তে শর্করা, চর্বির পরিমাণ পরীক্ষা করা, রক্তচাপ মাপা উচিত। মাত্রা বর্ডার লাইনে হলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

৮।উচ্চতা অনুযায়ী ওজন ঠিক আছে কি না দেখতে হবে। এ ধরনের পরিবারের সন্তানদের সামান্য উপসর্গকেও উপেক্ষা করা যাবে না। মেয়েরা গর্ভকালীন সময়ে অবশ্যই রক্তের শর্করা দেখে নেয়া উচিত।

৯।থাইরয়েডের সমস্যা পরিবারে থেকে থাকলে তা-ও দেখে নেওয়া ভালো।

১০।মা-খালাদের স্তন ক্যানসারের ইতিহাস থাকলে নিজের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। নিয়মিত নিজের স্তন পরীক্ষা করে দেখতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে আলট্রাসনোগ্রাম বা ম্যামোগ্রাফি করা উচিত

১১। কোলন ক্যানসারের ইতিহাস থাকলে পারিবারিক খাদ্যাভ্যাস পাল্টে ফেলতে হবে। লাল মাংস (গরু-খাসি) কম খাওয়া, বেশি আঁশযুক্ত খাবার ও ফলমূল খাওয়া।

 

রোগ প্রতিরোধের উপায়

 

১২।এ ছাড়া কিছু জিনগত রোগ আছে, যেমন থ্যালাসেমিয়ার জিন বংশগতভাবে সন্তানেরা পেয়ে থাকে। এসব ক্ষেত্রে শিশুকাল থেকেই তার যথাযথ স্ক্রিনিং, রোগ নির্ণয় প্রয়োজন। বড় হলে প্রয়োজনে যেন ব্যবস্থা নেওয়া যায় এ জন্য সচেতন হতে হবে।

এ ধরনের পরিবারে নিজেদের মধ্যে বিয়ে না হওয়াই ভালো। ‘কাজিন ম্যারেজ’ পরবর্তী প্রজন্মের সমস্যাকে আরও প্রকট করে তুলতে পারে। এমনকি বিয়ে-শাদির সময় জীবনসঙ্গীও এ ধরনের জিনের বাহক কি না তা জেনে নেওয়া ভালো।

আরও দেখুন:

Leave a Comment