আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় স্যাম্পল কালেকশন বা নমুনা সংগ্ৰহ – যা ক্লিনিক্যাল কেয়ার সাপোর্ট এর অন্তর্ভুক্ত |
স্যাম্পল কালেকশন বা নমুনা সংগ্ৰহ

আমরা জানি যে, ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা-নীরিক্ষার মাধ্যমেই একজন সুস্থ অথবা অসুস্থ রোগীর স্বাস্থ্য সম্পর্কে পুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। সঠিক রোগ নির্ণয় বা ডায়গনসিস এবং চিকিৎসার সিদ্ধান্তগুলো আংশিকভাবে এই পরীক্ষার ফলাফলের নির্ভুলতার উপর নির্ভর করে। তাই সঠিক ফলাফলের জন্য যথাযথভাবে রোগীকে প্রভুতকরন, নমুনা সংগ্রহ এবং পদ্ধতি হল একটি অপরিহার্য পূর্বশর্ত।
তাই যে সমস্ত সেটিংসে নানা ধরনের নমুনাগুলো সংগ্রহ করা হয় সে সমস্ত জায়গায় দারিত্বে থাকা নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের বর্তমান প্রচলিত জীবাণুমুক্ত কৌশলগুলো অবশ্যই অনুসরণ করা উচিত। যেমন, সুঁচ, সিরিঞ্জ, ক্যাথেটার, কলোস্টমি ব্যাগ, বাটারফ্লাই নিডল, গিপিছ এবং অন্যান্য সরঞ্জাম জীবানুমুক্তকরন সংক্রান্ত সকল বিষয়ে সতর্কতামুলক জ্ঞ থাকা জরুরি।
মনে রাখতে হবে নমুনা সংগ্রহ করা হয় এমন সব জৈবিক উপাদানকে বিষাক্ত উপাদান হিসাবে বিবেচনা করে এর বর্জ্য ব্যাবস্থাপনার পাশাপাশি সঠিক পদ্ধতি সমূহ গুরুত্বের সাথে পালন করতে হবে। রোগীদের এবং স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের উভয়ের নিরাপত্তার জন্য নমুনা সংগ্রহকারী এবং প্রস্তুতির সাথে জড়িত সকলকেই বর্তমানে সুপারিশকৃত সকল মান বজায় রেখে এই কাজটি সম্পন্ন করতে হয়।
স্যাম্পল বা নজুনা: ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য কোনো ব্যক্তির শরীর থেকে যে পদার্থ নেওয়া হয় তাকে
নমুনা (Specimen) বলে। যেমন: রক্ত, মল, কফ, প্ৰসাৰ, সোয়াৰ ইত্যাमি। বিভিন্ন ধরনের স্যাম্পল: চিকিৎসা বিজ্ঞানে অসংখ্য পরীক্ষা রয়েছে এবং যেগুলোর জন্য আলাদা আলাদা ধরনের নমুনা সংগ্রহ করতে হয়। তবে সাধারণত যে সমস্ত নমুনাসমূহ সংগ্ৰহ করা হয় সেগুলো নিম্নরূপ:

ক) রডের নজুনা: এটি করার জন্য প্রশিক্ষিত কেউ (সাধারণত একজন ক্রেবোটোমিস্ট, ডাক্তার বা নার্স ) দ্বারা রক্তনালী (কৈশিক, শিরা এবং কখনও কখনও ধমনী) থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা যেতে পারে।
বিশেষ সংগ্রহের টিউবে রক্ত বের করার জন্য একটি সুই ব্যবহার করে নমুনা নেওয়া হয়। বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন ধরনের টিউব ব্যবহার করা যেতে পারে। কিছু রক্তের নমুনা আঙুলের খোঁচা দিয়ে পাওয়া যেতে পারে যা শুধুমাত্র এক ফোঁটা রক্ত দিয়েই করা যায়, যেমন গ্লুকোজ পরীক্ষা।
খ) মন সংগ্ৰহ: ব্যাক্তিকে টয়লেটে পাঠিয়েই সাধারণত এই নমুনা নিজেকেই সংগ্রহ করতে বলা হয়। তবে মুমূ রোগীর কাছ থেকে সংগ্রহ করার পদ্ধতিটি ভিন্ন থেকে ভিন্নতর হতে পারে। মলের সাথে যাতে প্রসাব মিশ্ৰিত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখাটাই এই নমুনা সংগ্রহের মূল সাবধানতার বিষয়। এই অধ্যায়ে পরবর্তীতে মল সংগ্রহের পদ্ধতি আলোচনা করা হবে।
গ) প্রসাবের নমুনা: এই নমুনা সংগ্রহের জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগীকে একটি পাত্রে বা কন্টেইনারে প্রস্রাব ধরার জন্য বলা হয়। কন্টেইনারে প্রসাব ধারনের পূর্বে মূত্রনালীর বাইরের অংগের সংস্পর্শের দ্বারা যাতে নমুনা দুষিত না হয় সে জন্যে রোগী কীভাবে যোনাঙ্গ পরিষ্কার করবে সে বিষয়ে নির্দেশনাবলি দেওয়া হয়।
তাছাড়া ব্যক্তিকে কিন্তু প্রসাব নিঃসরণ করার পর মাঝ পথে কিভাবে কন্টেইনারে প্রসাব সংগ্রহ করবে সে ব্যাপারেও স্বাস্থ্যজ্ঞান প্রদান করা হয়। রোগীর অবস্থাভেদে কখনও কখনও ক্যাথেটার থেকেও বিশেষ দক্ষতা কাজে লাগিয়ে প্রসাবের নতুনা সংগ্রহ করা হয়ে থাকে।
ঘ) কঙ্ক সংগ্রহ: এই নমুনা সংগ্রহের ক্ষেত্রে রোগীকে যতটা সম্ভব ফুসফুসের ভিতর দিক থেকে কাশির জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। (একজন স্বাস্থ্যকর্মী এ কাজটি করার জন্য রোগীকে সহায়তা করতে পারেন।) কোনো কিছু পান অথবা খাবারের পূর্বে কৃষ্ণ সংগ্রহের জন্য সকাল বেলাকেই মোক্ষম সময় বলে বিবেচনা করা হয়।
এ সময় রোগীকে কন্টেইনারে কফ দেওয়ার আগে ধীরে ধীরে কয়েকবার গভীর শ্বাস নেওয়ার পরে কাশি দিতে বলা হয়। সংগৃহীত কফ অপেক্ষাকৃত ঘন হওয়া উচিত যেন সেটা সাধারণ লালা মিশ্রিত না হয়।
নাসোফেরেজিয়ান সোয়াব (Nasopharyngeal Swab ) সংগ্রহ : এটি কিনিকাল পরীক্ষার জন্য একটি পদ্ধতি যেটি রোগীর অনুনাসিক ক্ষরণ এর পিছনে থেকে নাক এবং গলা থেকে সোয়াৰ সংগ্রহের মাধ্যমে করা হয়। নাকের শেষ প্রান্তে গিয়ে গলার পিছনের দেওয়াল Nasopharynx) থেকে একটি প্লাস্টিকের সৃষ্টি ( সোয়াৰ বেষ্টিত সরু কাঠি দিয়ে এই নমুনা সংগ্রহ করতে হয়।

এটি নাকে প্রবেশের সাথে সাথেই রোগী হাঁচি দিতে শুরু করে। যার ফলে নাকের শেষ পর্যন্ত যাওয়া এবং সেখানে স্টিকের কটন সোক করার জন্য ন্য २ সেকেন্ড স্টিকটি ধরে রাখতে হয়। এই ক্ষেত্রে যিনি নমুনা নিবেন তাকে ভালোভাবে পারসোনাল প্রোটেকটিভ ইকুরেপমেন্ট (PPE) পরতে হয় ইনফেকশন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য।
আরও দেখুন: