আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগ – যা সংক্রমণ, প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ এর অন্তর্ভুক্ত।
সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগ
সংক্রমণের ফলে কোনো পোষক জীবদেহে রোগ সৃষ্টিকারী সংঘটকের প্রবেশ, আক্রমণ, সংখ্যাবৃদ্ধি, পোষক দেহকলার সাথে সংঘটিত বিক্রিয়া এবং এর ফলে উৎপন্ন উপসর্গের সমষ্টিকে বোঝায়। সংক্রমণের ফলে সৃষ্ট রোগকে সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগ বলে।
শ্রেণিবিভাগ: উপসর্গের ভিত্তিতে সংক্রমণ দুই প্রকার।
১) অনির্ণীত সংক্রমণ (Sub clinical infection) বা অসম্পূর্ণ রোগ লক্ষণ নিয়ে প্রকাশ পায়। ২) নির্ণীত সংক্রমণ (Clinical infection) যা পূর্ণ রোগ লক্ষণ নিয়ে প্রকাশ পায়।
জীবাণুর ভিত্তিতে সংক্রমণ
১) ব্যাক্টেরিয়া জনিত
২) ভাইরাস জনিত
৩) ছত্রাক জনিত
৪) প্লাজমোডিয়াম জনিত
সংক্রমিত অঙ্গের ভিত্তিতে রোগের সচিত্র তথাহরণ:

সংক্রমণ সংঘটক (Agent) যেমন- ভাইরাস, ভিরয়েড, প্রিয়ন, ব্যাকটেরিয়া, নেমাটোড (বিভিন্ন প্রকার কৃষি), পিঁপড়া, আর্থ্রোপড যেমন উকুন, মাছি এবং বিভিন্ন প্রকার ছত্রাক দ্বারা সংঘটিত হয়। লক্ষণ ও উপসর্গ
১. সংক্রমণের উপসর্গ রোগের ধরনের উপর নির্ভর করে।
২. সংক্রমণের কিছু লক্ষণ সাধারণত পুরো শরীরকে প্রভাবিত করে, যেমন ক্লান্তি, ক্ষুধা হ্রাস, ওজন
হ্রাস, জ্বর, রাতে ঘাম, ঠাণ্ডা, ব্যথা।
৩. অন্যদের চামড়ায় দাগ, কাশি ইত্যাদি হতে পারে।

সম্পুরক পরিভাষা:
দূষিতকরণ (Contamination)
কোনো সংক্রামক জীবাণুর উপস্থিতি, যথা- কাপড়চোপড়, বিছানাপত্র, নিত্য ব্যবহার্য সামগ্রী, পানি বা খাদ্য বস্তু ইত্যাদি
দূষণ (Pollution)
সংক্রামক জীবাণু বা যে কোনো ক্ষতিকর বস্তু পরিবেশে উপস্থিতিকে দূষণ বলে। যেমন- বায়ু দূষণ, পানি দূষণ, শব্দ দূষণ ইত্যাদি।
পরজীবী সংক্রমণ (Infestation):
শরীরের ভেতরে বা বাহিরে কোন পরজীবীর উপস্তিতি, বৃদ্ধি, বংশবৃদ্ধিকে পরজীবী সংক্রমণ বলে। যেমন- কৃমি দ্বারা সংক্রমণ, চুলে উকুন থাকা, ম্যালেরিয়ার জীবাণু দ্বারা সংক্রমণ ইত্যাদি।

সংক্রামক রোগ (Contagious disease):
সংস্পর্শজনিত কারণে জীবাণু দ্বারা সংক্রমণ বা সৃষ্ট রোগকে সংক্রামক রোগ বলে। যেমন – খোচ পাচড়া (Scabies), হাম, কলেরা, বসন্ত, ফ্লু ইত্যাদি।
গণসংক্রামক রোগ (Communicable disease):
সংক্রামক জীবাণু দ্বারা সংঘটিত রোগ যা প্রত্যক্ষভাবে মানুষ থেকে মানুষে, প্রাণি থেকে প্রাণিতে বা মানুষে, পরিবেশ থেকে মানুষে বিস্তার লাভ করে তাকে গণসংক্রামক রোগ বলে।
আরও দেখুন: