পেশেন্ট কেয়ারে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা জব

আজকে আমরা পেশেন্ট কেয়ারে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা জব সম্পর্কে আলোচনা করবো। যা পেশেন্ট কেয়ার টেকনিক ১ এর পেশেন্ট কেয়ারে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা অংশের অন্তর্গত।

 

পেশেন্ট কেয়ারে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা জব

 

পেশেন্ট কেয়ারে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা জব

জব -১ সঠিকভাবে PPE পরা ও খোলার পদ্ধতি

পারদর্শীতার মানদন্ড

  • স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম ও নির্ধারিত পোশাক পরিধান কর।
  • ধাপ অনুসারে একটির পর একটি পিপিই পরিধান কর।
  •  জব অনুযায়ী টুলস, ইকুইপমেন্ট, ম্যাটেরিয়াল বাছাই এবং সংগ্রহ করা • আপনার কাজে সহায়তা করার জন্য একজন সহকর্মী প্রস্তুত রাখুন।
  • ব্যবহৃত জিনিসসমূহ নির্ধারিত বর্জ্য (বায়োহ্যাজার্ড ব্যাগ) ধারকে ফেলে দিন।

ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (PPE)/প্রয়োজনীয় ম্যাটারিয়্যালস: একটি পিপিই সেটে থাকে-

১. গাউন, ২. পলি এপ্রোন, ৩. অ্যালকোহল পাড়ি, ৪. সু-কাভার, ৫. গ্লাভস ২ জোড়া, ৬. এন-৯৫/ সার্জিক্যাল মাস্ক, ৭. চশমা বা গগলস। ৮. হাইপোক্লোরাইট দ্রবণ, ৯. বায়ো হ্যাজার্ড ব্যাগ ১০। স্যানিক্লথ।

 

পেশেন্ট কেয়ারে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা জব

 

কাজের ধারা:

১। প্রথমে হাত ধুয়ে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করে নিতে হবে। হাতের ওপরে এবং আঙুলের ফাঁকে, আঙুলের পেছনের উঁচু জায়গা এবং বুড়ো আঙুলের পেছনে ভালো করে পরিষ্কার করে হাতের কবজি একইভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর এক জোড়া গ্রাভস পরে নিতে হবে। এসময় খেয়াল রাখতে হবে, গ্লাভস হাতে ফিট করে কিনা। যার হাতে যেটা ফিট করে সেটাই পরা উচিত। এজন্য আগে থেকেই হাতের নাগ সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে।

২। তারপর গাউন পরতে হবে। চেষ্টা করতে হবে গাউন যেন মাটির মধ্যে না লাগে। এজন্য পুটিয়ে গাউন পরতে হবে। গাউনের ক্যাপ আগেই পরা যাবে না।

৩। এরপর মাস্ক পরে নিতে হবে। মাক্ষের বাইরের অংশে হাত লাগিয়ে পরতে হবে। মাস্ক পরার পর নাকের ওপরের সিল করা অংশ হাত দিয়ে চেপে বসাতে হবে, যাতে মাস্ক ভালোভাবে বসে যায়।

৪। এরপর পালস পরতে হবে। যারা চশমা পরেন তারা চশমা পরার পর গগলস পরবেন। পগলসের দুইপাশে থাকা ফিতার মতো অংশ ভালোভাবে টেনে নিতে হবে। এতে সেটি ভালোমতো ফিট হয়ে যাবে।

৫। এরপর গাউনের ক্যাপ দিয়ে মাথা ঢেকে নিতে হবে। গগলসের ওপরে দুটি বাটন আছে। এতে গাউনের ক্যাপ ভালোভাবে বসিয়ে নিতে হবে। অনেকসময় গাউন পরার পর গলার অংশে একটু ফাঁক থাকতে পারে। তখন মাইক্রোপোর দিয়ে জায়গাটি বন্ধ করে দিতে হবে। পাউন পরার পর সু -কাতার পরে নিতে হবে।

৬। এরপর অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য পলি এপ্রোন গাউনের ওপর পরতে হবে। পলি এপ্রোন পেছনে বেঁধে নিতে হবে।

৭। এখন আরেকটি গ্লাভস পরতে হবে। অর্থাৎ মোট দুইটি গ্লাভস পরতে হবে। গ্লাভস পরার পর হাতের কাজির অংশ ফাঁকা থাকলে আরেকটি মাইক্রোপোর দিয়ে ফাঁকা জায়গা বন্ধ করে নিতে হবে।

৮। রোগীর কাছে যাওয়ার আগেই পিপিই খোলার জায়গা বা ডকিং এরিয়া ঠিক করে নিতে হবে। এজন্য বায়ো হ্যাজার্ড ব্যাগ লাগবে। এই ব্যাগটি একটি বিনের ওপর সাজিয়ে নিতে হবে।

 

পেশেন্ট কেয়ারে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা জব

 

খ। পিপিই খোলার নিয়ম:

১। পিপিই ব্যবহারের পর ভর্কিং এরিয়াতে এসে স্যানিরুণ দিয়ে গ্লাভস এবং সু-কাতার প্রথমে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এবার সু | কাভার খুলতে হবে। পেছন দিক থেকে সু কাভার খুলে বিনে ফেলতে হবে।

২। এরপর পলি এপ্রোন সাধার পেছন থেকে ধরে সামনে এনে খুলে বাইরের দিকটা ভেতরে ঢুকিয়ে ভাঁজ করে বিনে ফেলতে হবে এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে আবার হাত পরিষ্কার করে নিতে হবে।

৩। এবার প্রথম প্লাসটি শুনতে হবে। গ্লাভসের বাইরের অংশ যেন ভেতরের দিকে থাকে সেভাবে খুলতে হবে। পিপিই খোলার সময় খেয়াল রাখতে হবে, শরীরে যেন কোনো স্পর্শ না লাগে।

৪। প্রথমে গাউন ও হাতের মাইক্রোপোর খুলে বিনে ফেলতে হবে। এরপর গাউনের চেইন খুলে মাথার ক্যাপ খুলতে হবে। গাউনের হাত উল্টে ভেতরের দিকে রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, গাউনের বাইরের দিকটি জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত ও ভেতরের দিকটি পরিষ্কার। পাউন ওপর থেকে এমনভাবে খুলতে হবে যাতে বাইরের অংশটি ভেতরে ঢুকে যায় এবং রোল করে খুলতে হবে যাতে মেঝেতে গাউন স্পর্শ না করে। গাউন বিনে ফেলে দেওয়ার পর অ্যালকোহল গ্যাড দিয়ে আবার হাত পরিষ্কার করে নিতে হবে।

৫। এরপর পালস খুলতে হবে। গগলস সামনে একহাত দিয়ে ধরে পেছনে ফিতা খুলে নিতে হবে। এবার | হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে আবার হাত পরিষ্কার করে মাস্ক খুলতে হবে। মাস্ক খোলার সময় একহাত দিয়ে মাক্ষের বাইরের অংশ চেপে ধরে আরেক হাত দিয়ে একটি একটি করে ফিতা খুলতে হবে। এবার শাক্ষ
বিনে ফেলে দিতে হবে ।

৬। আবার অ্যালকোহল প্যাড দিয়ে হাত মুছে সবশেষে দ্বিতীয় গ্লাভসটিও খুলে বিনে ফেলে দিতে হবে। যে বায়ো হ্যাজার্ড ব্যাগে এগুলো ফেলা হল সেটি বন্ধ বা সিল করে দিতে হবে। বায়ো হ্যাজার্ড ব্যাগ বন্ধ করার আগে আরেক জোড়া গ্লাভস ও সার্জিক্যাল মাস্ক পরে নিতে হবে।

৭। এরপর ব্যাপের মধ্যে ১% হাইপোক্লোরাইড চৰণ ফেলে দিয়ে এই ব্যাগ বন্ধ করার সময় সুখ দূরে রাখতে হবে। ব্যাগে ভালো করে প্যাঁচ দিয়ে গিট দিতে হবে। সতর্কতা হিসেবে ব্যাগের বাইরের দিকেও খানিকটা হাইপোক্লোরাইড স্প্রে করে দিতে হবে। এরপর বিনে (বর্জ্য ধারক) রেখে দিতে হবে, যাতে পরবর্তীতে ক্লিনার এসে এটা নিয়ে যেতে পারে।

৮। সবশেষে যে মাস্ক ও গ্লাভসটি ব্যবহার করা হবে সেগুলো আরেকটি বারো হ্যাজার্ড ব্যাগে ফেলতে হবে।

 

পেশেন্ট কেয়ারে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা জব

 

কাজের সতর্কতা

১. পিপিই কখনোই কর্মস্থলের বাইরে নেয়া যাবে না;

২. পিপিই দিয়ে শরীরের সব অংশ ঢেকে রাখতে হবে;

৩. দুইজন একত্রে পিপিই পরে নিতে হবে। এক্ষেত্রে একজন অপরজনের উপর নজর রাখা যেতে পারে;

৪. পিপিই খোলার সময় খুব সাবধানে খুলে সেটি ঢাকনা দেওয়া নির্দিষ্ট বিনে রাখতে হবে;

৫. পিপিই খোলার সাথে সাথে গোসল করে নতুন কাপড় পরতে হবে।

অর্জিত দক্ষতা/ফলাফল:

তুমি পিপিই পরা ও খোলার প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছ।

ফলাফল বিশ্লেষণ/মন্তব্য:

আশাকরি বাস্তব জীবনে তুমি এর যথাযথ প্রয়োগ করতে পারবে।

 

google news logo
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

জব-২: অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র ব্যবহার করে আগুন নেভানো

প্রয়োজনীয় ম্যাটারিয়্যালসঃ

প্রযোজ্য নহে।

কাজের ধারা:

১। অগ্নি নির্বাপন যন্ত্রটি নির্ধারিত স্থান থেকে ক্যারি হ্যান্ডেল ধরে নামাতে হবে।

২। অগ্নি নির্বাপন যন্ত্রটি নিয়ে আগুনের কাছে গিয়ে সেফটি লক ও সেফটি পিন টান দিয়ে খুলতে হবে।

৩। বাতাসের অনুকুলে দাড়াতে হবে,

৪। বাম হাত দিয়ে ডিসচার্জ পাইপের নলটি আগুনের উৎসের দিকে টার্গেট করে রাখতে হবে।

৫। ডান হাত দিয়ে ক্যারি হ্যান্ডেল ধরে নলটি আগুনের উৎসের দিকে তাক করে রাখতে হবে।

৬। অপারেটিং লিভার চাপ দিয়ে এভাবে আগুনের উৎস টার্গেট করে পাইপের নলটি সুইপ করিয়ে আগুন নিভাতে হবে।

 

পেশেন্ট কেয়ারে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা জব

 

কাজের সতর্কতা

১। বাতাসের অনুকুলে ব্যবহার করা।

২। যথাসম্ভব আগুনের নিকটবর্তী অবস্থান থেকে ব্যবহার করা।

৩। সরাসরি মানুষের শরীরে ব্যবহার না করা।

৪। ড্রাই কেমিক্যাল পাউডার ব্যবহারের সময় সাবধানতা অবলম্বন করা যাতে শ্বাস প্রশ্বাসের সহিত শরীরে
প্রবেশ করতে না পারে।

৫। সিওটু (CO2) ফায়ার এক্সটিংগুইসার ব্যবহারের সময় সতর্কতার সাথে এর ডিসচার্জ হর্ন ধরা। অসতর্কতার কারণে কুল বার্ণ হতে পারে।

৬। বিভিন্ন ধরনের আগুনের জন্য বিভিন্ন রকমের অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র রয়েছে। ভুল শ্রেণির অগ্নিনির্বাপক যন্ত্ৰ ব্যবহারের ফলে আগুন আরও বাড়তে পারে তাই সঠিক অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করা উচিত।

৭। এই নীতি মনে রাখতে হবে, বেরিয়ে যান, বাইরে থাকুন, ফায়ার সার্ভিসকে খরব দিন।

অর্জিত দক্ষতা/ফলাফল :

তুমি অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র ব্যবহার করে আগুন নেভানোর প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছ।

ফলাফল বিশ্লেষণ/মন্তব্য:

আশাকরি বাস্তব জীবনে তুমি এর যথাযথ প্রয়োগ করতে পারবে ।

আরও দেখুনঃ

1 thought on “পেশেন্ট কেয়ারে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা জব”

Leave a Comment