আজকে আমরা স্নায়ু টিস্যু সম্পর্কে আলোচনা করবো। যা পেশেন্ট কেয়ার টেকনিক ১ এর বেসিক হিউমান বায়োলোজি ও এর প্রয়োগ অংশের অন্তর্গত।

স্নায়ু টিস্যু (Nerve tissue)
প্রাণীদেহের যে টিস্যু উদ্দীপনায় সাড়া দিয়ে উপযুক্ত প্রতিবেদন সৃষ্টি করতে পারে তাকে স্নায়ুকলা বা স্নায়ু টিস্যু বলে। স্নায়ুকলার একক হচ্ছে স্নায়ুকোষ বা নিউরন। মস্তিষ্ক স্নায়ুকোষ বা নিউরন দিয়ে তৈরি। নিউরন স্নায়ুতন্ত্র গঠনকারি একক। মানুষের মস্তিষ্কে ১০০ বিলিয়ন নিউরন থাকে। মানুষের সুষুম্নাকান্ডে ১৩.৫ মিলিয়ন নিউরন থাকে।

দেহের বিশেষ সংবেদী কোষ নিউরন বা স্নায়ুকোষগুলো একত্র স্নায়ু টিস্যু গঠন করে। স্নায়ুটিস্যু পরিবেশ থেকে উদ্দীপনা যেমন তাপ, স্পর্শ, চাপ ইত্যাদি বার্তা আকারে বহন করে নিয়ে যায়। একটি আদর্শ নিউরনের তিনটি অংশ থাকে, কোষদেহ, ডেনড্রাইট এবং অ্যাক্সন।

নিউরন কোষ বহুভুজাকৃতি এবং নিউক্লিয়াসযুক্ত। কোষের সাইটোপ্লাজমে মাইটোকন্ড্রিয়া, গলজিবডি, রাইবোজোম, এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম ইত্যাদি থাকে, তবে সাইটোপ্লাজমে সক্রিয় সেন্ট্রিওল থাকে না বলে নিউরন বিভাজিত হয় না। কোষদেহের চারদিকের শাখাযুক্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রলম্বিত অংশকে ডেনড্রন বলে। ডেনড্রন থেকে যে শাখা বের হয়, তাদের ডেনড্রাইট বলে। ডেনড্রাইটের সংখ্যা এক বা একাধিক হতে পারে।
নিউরনের কোষদেহ থেকে একটি লম্বা স্নায়ুতন্তু পরবর্তী নিউরনের ডেন্ড্রাইটের সাথে যুক্ত থাকে, তাকে অ্যাক্সন বলে। একটি নিরনের একটি মাত্র অ্যাক্সন থাকে। স্নায়ুকোষগুলো দেহে জালের মত ছড়িয়ে থাকে। পরপর দুটি নিউরনে প্রথমটির অ্যাক্সন এবং পরেরটি ডেনড্রাইটের মধ্যে যে স্নায়ুসন্ধি গঠিত হয়, তাকে সিন্যাপস (Synapse) বলে।

সিন্যাপসের মধ্য দিয়েই একটি নিউরন থেকে উদ্দীপনা পরবর্তী নিউরনে পরিবাহিত হয়। স্নায়ুতাড়না এক স্নায়ুকোষ থেকে অন্য স্নায়ুকোষে পরিবাহিত হয়।স্নায়ুটি উদ্দীপনা গ্রহণ করে মস্তিষ্কে প্রেরণ করে এবং মস্তিস্কে তাতে সাড়া দেয়। উচ্চতর প্রাণীতে স্নায়ুটি স্মৃতি সংরক্ষণ (Memorise) করাসহ দেহের বিভিন্ন অঙ্গের কাজ নিয়ন্ত্রণ এবং তাদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে।
আরও দেখুনঃ